ঝাড়গ্রাম পুরসভার স্থায়ী কমিটিগুলির পুনর্বিন্যাস সম্পন্ন হল। জল সরবরাহের স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদ থেকে বাদ পড়লেন গৌতম মাহাতো। পূর্তবিভাগের স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদ থেকে বাদ পড়েছেন গোবিন্দ সোমানি। রাজ্যের সবচেয়ে অধিক সংখ্যায় বসবাসকারী কুড়মি সমাজের মানুষ এই ঝাড়গ্রাম পুরসভায়। কিন্তু সেখানেই কোনো পদে কুড়মি প্রতিনিধি না থাকা নিয়ে সমাজে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। উঠছে বঞ্চনার অভিযোগ।
ঝাড়্গ্রাম পুরসভার মোট ১৮ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১৭ জন তৃণমূল ও ১ জন সিপিআই প্রতিনিধি। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, শাসক দলের কাউন্সিলরদের মধ্যে শহর তৃণমূলের সভাপতি তথা নবু গোয়ালা সহ ১২ জন কাউন্সিলর পুরপ্রধান কবিতা ঘোষ ও তাঁর অনুগামীদের বিরোধী। তাঁদের তরফে অভিযোগ উঠেছিল, পুরপ্রধান বেশিরভাগ কাউন্সিলরদের উপেক্ষা করে একতরফা ভাবে পুরসভার কাজকর্ম চালান। ফলে স্থায়ী কমিটির বন্টন নিয়ে মতবিরোধের কারণে অধিকাংশ কাউন্সিলর স্থায়ী কমিটি থেকে ইস্তফা দেন। এক বছর স্থায়ী কমিটিগুলির অনুমোদন সম্ভব হয়নি। যার ফলে পুরসভার কাজে তৈরি হচ্ছিল সমস্যা।
- Advertisement -
এরপরে জেলা তৃণমূল সভাপতি দুলাল মুর্মুর উপস্থিতিতে বৈঠকের পূর্ব নির্ধারিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১৪ মার্চ স্থায়ী কমিটিগুলির পুনরায় পুনর্বিন্যাস হয়। নবু গোয়ালার নেতৃত্বাধীন পুনর্বিন্যাসে ৮টি স্থায়ী কমিটির মধ্যে ৭টিতে নবু পন্থী কাউন্সিলররা সভাপতি পদ পেয়েছেন। জল সরবরাহের স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদ থেকে গৌতম মাহাতো ও পূর্তবিভাগের স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদ থেকে গোবিন্দ সোমানি বাদ পড়েছেন।
- Advertisement -
পুরসভা সূত্রে খবর, পুরপ্রধান এই বিন্যাসের বিরোধিতা করলেও সর্বসম্মতিক্রমে তা গৃহীত হয়ে যায়। ঝাড়গ্রাম জেলায় সব থেকে বেশি কুড়মি সমাজের মানুষের বাস। সেই ঝাড়গ্রাম পৌরসভার একমাত্র স্থায়ী কমিটিতে থাকা গৌতম মাহাতোকে বাদ দেওয়ায় সোচ্চার হয়েছেন কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজন। কুড়মি সমাজের একাংশের বক্তব্য, ঝাড়গ্রাম জেলাপরিষদে কুড়মি জনসংখ্যা সর্বাধিক হওয়ার পরেও কুড়মি তথা ওবিসিদের জন্য কোনো আসন সংরক্ষিত নয় কেন! ঝাড়গ্রাম পৌরসভার স্থায়ী সমিতির সভাপতি পদ থেকে গৌতম মাহাতোর অপসারণকে কুড়মিদের প্রতি বঞ্চনা হিসেবে চিহ্নিত করছেন অনেকে। সাম্প্রতিক সময়ে নিজেদের দাবি আদায়ে একাধিকবার আন্দোলনে নেমেছেন কুড়মিরা। এপ্রিল মাস থেকে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে নিজেদের দাবি জানাতে ‘ঘাঘর ঘেরা’ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে জঙ্গলমহলে। এখন দেখার ঝাড়গ্রাম পুরসভার ঘটনা সেই আন্দোলনে কোনো বিশেষ প্রভাব ফেলে কিনা।