“বঙ্গ বিজেপি মানে দিতে দেবো না, করতে দেবো না”, নদী সংস্কার ও ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে আক্রমণ মানস ভূঁইয়ার

"বঙ্গ বিজেপি মানে দিতে দেবো না, করতে দেবো না", নদী সংস্কার ও ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে আক্রমণ মানস ভূঁইয়ার

মঙ্গলবার সবং ব্লক তৃণমূল কার্যালয়ে দিদির সুরক্ষা কবচ নিয়ে কর্মীসভা করলেন রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভূঁইয়া। ১৩ টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ৫৫০ টি বুথের দায়িত্বে থাকা নেতা-কর্মীদের নিয়ে এদিন বৈঠক করেন। উপস্থিত ছিলেন ঘাটাল সাংগঠনিক চেয়ারম্যান অমল পান্ডা, সভাপতি আশীষ হুদাইত, প্রাক্তন বিধায়ক গীতারানী ভুঁইয়া, ব্লক সভাপতি আবু কালাম বক্স প্রমুখরা। মন্ত্রী দলীয় নেতা কর্মীদের বার্তা দেন, “আমারা কেউ নেতা নই। সবাই দলের কর্মী, দিদির কর্মী, দিদির দূত। কেউ নিজেকে নেতা ভাববেন না, সে তিনি যত বড়ই পদাধিকার হন।”

বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে কেলেঘাই-কপালেশ্বরী নদী সংস্কার প্রকল্পের টাকা ও ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান আটকে থাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন মানস ভূঁইয়া। কেলেঘাই-কপালেশ্বরী-বাঘাই সংস্কার প্রকল্প নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী বলেন, “৬৫০ কোটি টাকার প্রকল্প। বিজেপি আসার পর প্রকল্পের খরচ রাজ্য-কেন্দ্র অর্ধেক অর্ধেক। এখনও কেন্দ্রের বিজেপি সরকার অর্ধেক ৩২৫ কোটি টাকা পুরোটা দেয়নি। ১৪৭ কোটি টাকা এখনও বাকি আছে। উল্টে রাজ্য সরকার ২৫০ কোটি টাকা বেশি খরচ করে ফেলেছে। বাকি টাকার জন্য মুখ্যমন্ত্রী ৪ বার চিঠি দিয়েছেন, সেচ মন্ত্রী চিঠি দিয়েছেন, আমরা ডেলিগেশনে গিয়ে বলেছি। সেই টাকা পেলে চারটা ব্রিজ করে দিতাম! কিন্তু কেন্দ্রের বিজেপি সরকার টাকাটা এখনও দেয়নি।” তিনি আরও বলেন, “ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে এখনও ইন্টার মিনিস্ট্রিয়াল ছাড়পত্র ও মিনিস্ট্রি অফ এক্সপেনডিচারের ছাড়পত্র পাওয়া এখনও বাকি।” এরপর রাজ্য বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “বঙ্গ বিজেপি শুধু বলছে, ‘দিতে দেবো না, করতে দেবো না! নাম কাটাচ্ছি আরও কাটবো। ধ্বংস করে দেবো বাংলাকে।’ বঙ্গ বিজেপি মানে বিশৃঙ্খলা!”

আরও পড়ুন:  ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি মেদিনীপুরের গ্রামে গ্রামে, ঘোষণা অজিত মাইতির

ভারতী ঘোষ অভিযোগ এনেছেন, “দিদির সুরক্ষা কবচের নামে বিরোধীদের ভয় দেখানোই তৃণমূলের মূল উদ্দেশ্য!” সেই প্রসঙ্গে মানসবাবু বলেন, “উনি পুলিশ ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছেন, সাধারণ পুলিশ ব্যাকগ্রাউন্ড নয়। আমার মনে হয় বিশ্লেষণে ভুল হচ্ছে, ব্যাখ্যায় ভুল হচ্ছে।” তিনি বলেন, “এতে শ্রদ্ধা আছে, ভালোবাসা আছে, মমতা আছে। এর মধ্যে হুমকি কোথায়! মনে হয় ওনার বোঝার ভুল হয়েছে, তাই বলতে ভুল হয়েছে।” আবাস দুর্নীতি প্রসঙ্গে মানসবাবুর বক্তব্য, “আবাস দুর্নীতি কোনো দুর্নীতিই নয়৷ ১১ লক্ষ নাম বাদ দিয়েছি। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর কেন্দ্রীয় সরকারের চাপে পঞ্চায়েতগুলি শপথ নেওয়ার আগেই তালিকা পাঠাতে হওয়ায় ভুল নাম ঢুকে গেছে।” নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বলেন, “এটি তদন্ত ও কোর্টের ব্যাপার। এই নিয়ে কোনো কথা বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে আইন আইনের পথে চলছে।”

আরও পড়ুন:  Medinipur: কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ, এসপি-কে সতর্ক করে সার্ভিস বুকে উল্লেখের নির্দেশ আদালতের

সাম্প্রতিক সময়ে সবং-এ বেআইনি ভেরি নিয়ে বহু অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে মানসবাবুর পর্যবেক্ষণ, “বিষয়টি ভয়ঙ্কর।” অনেকে ন্যাহ্য টাকা পাচ্ছেন না বলে তাঁর কাছে অভিযোগ করায় তিনি ওসি, বিডিও প্রমুখদের টাকা উদ্ধারের জন্য অনুরোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, “এর ফলে দুটি সমস্যা তৈরি হচ্ছে। জল নিষ্কাশনের নালাগুলি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার মত এখানেও ভেরি নিয়ে সমস্যা তৈরি হতে পারে।” তিনি সবং এর মানুষদের হাত জোড় করে অনুরোধ জানিয়েছেন, “দয়া করে আর ঝিল বৃদ্ধি করবেন না। প্রকৃতির সঙ্গে ভালোবাসা বজায় রাখুন। যে জমিতে জল জমে আছে আমাদের জানান, আমরা জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করবো।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

হোম
জয়েন গ্রুপ
স্থানীয় খবর
জয়েন গ্রুপ
গুগল নিউজ