কুড়মিদের সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে নিজের বক্তব্যের জন্য কুড়মিদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু। তিনি বলেন, “রাগের মাথায় হয়তো বেশি বলা হয়ে গিয়েছিল। সেই বক্তব্যে কুড়মি মা-বোন-ভাইয়েরা আহত হয়েছেন। সকলের কাছে সেই বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।”
ঘটনার সূত্রপাত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিরবাহা হাঁসদার কনভয়ে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে৷ গত শুক্রবার ঝাড়গ্রাম শহরে নবজোয়ার কর্মসূচির রোড শো শেষ করে লোধাশুলি আসার পথে ঝাড়গ্রাম ব্লকের অন্তর্গত শালবনী এলাকায় পাঁচ নম্বর রাজ্য সড়কের উপর কুড়মিদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়। “চোর! চোর” স্লোগান সহ বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন কুড়মি সংগঠনের আন্দোলনকারীরা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ের শেষের দিকে মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার গাড়ি ছিল। অভিযোগ, মন্ত্রীর গাড়ি ও কনভয়ের অন্যান্য গাড়ি লক্ষ্য করে উড়ে আসে ইঁট পাটকেল। তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের গাড়িতে লাঠি হামলা চালানো হয় বলেও অভিযোগ। মন্ত্রীর গাড়ির কাঁচ ভেঙে যায়।
ঘটনার পরেই উত্তেজিত হয়ে ওঠেন ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু। তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে অভিযোগ করেন, “কুড়মি আন্দোলনের নাম করে যারা নেতা সেজেছে, পরিকল্পিত ভাবে আমাদের নেতা মন্ত্রী দলীয় কর্মীদের খুন করার চেষ্টা করেছে। যারা এই খুনের চেষ্টার সঙ্গে যুক্ত আছে, প্রশাসনকে বলবো তাদের গ্রেপ্তার করা হোক।” তিনি হুঁশিয়ারি দেন, “যদি প্রশাসন ব্যবস্থাগ্রহণ না করে, আমরাও জঙ্গলমহলের ছেলে, আমরাও মরদ আছি। তাদের বাড়ি থেকে তুলে এই হাইরোডে পেটাবো।”
এই বক্তব্য প্রকাশিত হতেই তীব্র প্রতিবাদ ওঠে কুড়মি সমাজের তরফে। প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু হয়। এবার বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে নিজের বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন দুলাল মুর্মু। তিনি ঐ দিনের ঘটনার পরিস্থিতি উল্লেখ করে বলেন, তিনি সমগ্র কুড়মি সমাজকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলতে চাননি। কনভয়ে হামলার ঘটনায় জড়িতদের কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে চেয়েছিলেন। ক্রোধের বশবর্তী হয়ে সেইদিন তিনি বেশিই বলে ফেলেছিলেন এবং তা কুড়মি সমাজের মানুষজনকে আহত করেছে বলে স্বীকার করেছেন তিনি। কুড়মি সমাজের মানুষজনের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা ও সহমর্মিতার কথা জানিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেছেন শাসক দলের জেলা সভাপতি।