কুড়মি আন্দোলন, কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাতোর গ্রেপ্তারি ও বিরবাহা হাঁসদার গাড়িতে হামলাকে কেন্দ্র করে ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে জঙ্গলমহল। রাজেশ মাহাতোর গ্রেপ্তারি ও কোচবিহারের স্কুলে বদলির প্রতিবাদে পথে নেমেছেন কুড়মিরা৷ অন্যদিকে মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদাকে হেনস্থা এবং তাঁর গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়ার প্রতিবাদে রাজ্যের আদিবাসী সংগঠনগুলি একত্রিত ভাবে আগামী ৮ জুন বনধের ডাক দিয়েছে রাজ্যে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয় ও বিরবাহা হাঁসদার গাড়িতে হামলার ঘটনায় কুড়মি আন্দোলনের ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেশ মাহাতো সহ ৮ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। ধৃতদের রবিবার ঝাড়গ্রাম আদালতে পেশ করা হলে একদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার ফের তাঁদের আদালতে পেশ করা হবে। সেই সঙ্গে রাজেশ মাহাতো পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরের বনপুর হাই স্কুলে শিক্ষকতা করেন। শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে তাঁকে চিঠি দিয়ে কোচবিহারের চামতা আদর্শ হাই স্কুলের শিক্ষক হিসাবে বদলির বিষয়ে জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে আগামী ৫ দিনের মধ্যে বনপুর হাই স্কুলের কাজ থেকে তাঁকে অব্যহতি নিতে হবে এবং তারপরের তিন দিনের মধ্যে চামতা আদর্শ হাই স্কুলের শিক্ষক হিসাবে যোগ দিতে হবে বলেও চিঠিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যে রাজেশ মাহাতোর বদলি ও গ্রেপ্তারিকে অনৈতিক দাবি করে আন্দোলনে নেমেছে কুড়মি সংগঠনগুলি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ক্লিনচিট দিলেও গ্রেপ্তারি কেন সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। শাসকদলকে কটাক্ষ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। একাধিক মানবাধিকার সংগঠনও ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে।
অন্যদিকে বিরবাহা হাঁসদার গাড়িতে হামলার ঘটনায় একত্রিত হয়েছে আদিবাসী সংগঠনগুলি। ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল, ভারতীয় আদিবাসী ভূমিজ সমাজ, কোড়া সমাজ, শবর এবং মাহালি সমাজ, সারা ভারত সাঁওতাল একক সংগঠন সহ ১৪টি আদিবাসী সংগঠনের প্রতিনিধিরা শনিবার বাঁকুড়ার রাঢ় অ্যাকাডেমিতে একটি কনভেনশনে একত্রিত ভাবে যৌথ মঞ্চ গঠন করেছেন। ‘ইউনাইটেড ফোরাম অফ অল আদিবাসী অর্গানাইজেশনস অফ ওয়েস্টবেঙ্গল’ নামে সেই যৌথ মঞ্চের তরফে আদিবাসী মহিলা বিরবাহাকে হেনস্থার অভিযোগে আগামী ৮ জুন রাজ্যে বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। আদিবাসীদের সাংবিধানিক অধিকার বহু ক্ষেত্রে খর্ব করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ আনা হয়েছে আদিবাসী সংগঠনগুলির তরফে।