সিদ্ধার্থ গৌতম শাক্য প্রজাতন্ত্রের নির্বাচিত প্রধান ক্ষত্রিয় বংশের শুদ্ধোধনের পুত্র ছিলেন। তার মাতা মায়াদেবী কোলিয় গণের রাজকন্যা ছিলেন। গর্ভাবস্থায় মায়াদেবী কপিলাবস্তু থেকে পিতৃরাজ্যে যাবার পথে অধুনা নেপালের তরাই অঞ্চলের অন্তর্গত লুম্বিনী গ্রামে এক শালগাছের তলায় সিদ্ধার্থের জন্ম দেন। সেই রাজপুত্র ঘটনাক্রমে বুদ্ধত্ব লাভের পর হয়ে ওঠেন গৌতম বুদ্ধ। জগৎকে সন্ধান দেন জীবনের সার সত্যের।

কথিত আছে, শুদ্ধোধন শিশুর জন্মের পঞ্চম দিনে নামকরণের জন্য আটজন ব্রাহ্মণকে আমন্ত্রণ জানালে তারা শিশুর নাম রাখেন সিদ্ধার্থ অর্থাৎ যিনি সিদ্ধিলাভ করেছেন। শিশুকে দেখে ভবিষ্যদ্বাণী করেন, এই শিশু পরবর্তীকালে একজন রাজচক্রবর্তী অথবা একজন সিদ্ধ সাধক হবেন। ব্রাহ্মণ কৌণ্ডিন্য স্পষ্টভাবে জানিয়েছিলেন, এই শিশু পরবর্তীকালে বুদ্ধত্ব লাভ করবেন। মাতার মৃত্যুর পর তিনি বিমাতা গৌতমী তাঁকে বড় করেন। তাই তিনি সিদ্ধার্থ গৌতম।

শুদ্ধোধনের ভগিনী অমিতার কন্যা যশোধরার সঙ্গে সিদ্ধার্থ গৌতমের বিবাহ সম্পন্ন হয়। তাঁদের সন্তান রাহুল। উনত্রিশ বছর বয়সে রাজকুমার সিদ্ধার্থ প্রাসাদ থেকে ভ্রমণে বের হয়ে একজন বৃদ্ধ মানুষ, একজন অসুস্থ মানুষ, একজন মৃত মানুষ ও একজন সন্ন্যাসীকে দেখতে পান। এরপরেই জীবনের সার সত্য অনুসন্ধানের জন্য তিনি গৃহত্যাগ করে সন্ন্যাস নেন। এই ঘটনা মহাভিনিষ্ক্রমণ নামে পরিচিত। কঠোর সাধনার পর বিহারের গয়ায় এক গাছের নীচে তিনি বৌধিজ্ঞান লাভ করেন বলে কথিত আছে। সেই সার সত্য তিনি সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচারে ব্রতী হন। কথিত আছে, ৮০ বছর বয়সে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের কুশীনগরে বুদ্ধদেব দেহত্যাগ করেন । গৌতম বুদ্ধের এই দেহত্যাগের ঘটনা ‘মহাপরিনির্বাণ’ নামে পরিচিত।