পাহাড় প্রমান দুর্নীতিতে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা, আগামী দিনে বাংলা যোগ্য মানবসম্পদ তৈরি করতে পারবে?

পাহাড় প্রমান দুর্নীতিতে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা, আগামী দিনে বাংলা যোগ্য মানবসম্পদ তৈরি করতে পারবে?

শিক্ষা-চাকরি-ধর্না-টেট-ডিএ, বর্তমানে খবরের কাগজ খুললেই এই শব্দগুলো লক্ষ্য করা যায়, ডিজিট্যাল নিউজ বা টিভির সংবাদ শিরোনামেও যেন আর কোন খবর নেই। তবে এই শব্দ গুলো নিয়ে যে কোন শিরোনাম হোকনা কেন তাতে আমাদের রাজ্যের কঙ্কালসার শিক্ষা ব্যবস্থার কথাই কিন্তু উঠে আসছে। আমরা শুনছি-পড়ছি-দেখছি কিন্তু বুঝছি কম। যা বুঝছি না, তা যখন বুঝব তখন হয়তো আর কিছু করার থাকবেনা।

জীবনের প্রথম পর্যায়ে আমরা সবাই মানব শস্য হিসেবে জন্ম নিয়ে থাকি। ধিরে ধিরে আমাদের সমাজ, আমাদের শিক্ষা দীক্ষা আমাদের মধ্যে তৈরি করে মানব সম্পদ। এই মানব সম্পদ সমাজকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়, আমরা তৈরি করি নতুন যুগের, নতুন প্রযুক্তির, নতুন ভাবনার। আরও একটি প্রজন্ম আসে রূপ নেয় সেই ভাবনারা। এভাবেই প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মানবসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে ভারত জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে। ভারতের সাথে তালে তাল মিলিয়ে এগিয়েছে বাংলা-বাঙালিও। কিন্তু আগামী দিনে বাংলা কী আদেও এই যোগ্য মানবসম্পদ তৈরি করতে পারবে তা আজ প্রশ্নচিহ্নের কাছাকাছি।

ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে স্কুল, যারা সমাজ তৈরীর কারিগর সেই শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে টাকার বিনিময়ে।আর এই অযোগ্য-আপদার্থ গুলো আগামী প্রজন্মকে কী শিক্ষা দেবে? অভিভাবকগণ ভাবুন ভাবা, শুরু করুন।

শুধু এখানেই শেষ নয়, এর পর দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ শিক্ষক নিয়োগ, ফলে গ্রামগঞ্জের স্কুল গুলোতে এখন শুরু হয়েছে শিক্ষক ঘাটতি। এই ঘাটতি কবে মিটবে কেউ জানেনা। ধিরে ধিরে শিক্ষকের অভাবে অভিভাবকগণ বাধ্য হবেন তার ছেলে-মেয়েকে কোন বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করতে। শহরের মতোই গ্রামে গ্রামে গড়ে উঠবে কর্পোরেটদের সৌজন্যে বেসরকারি বিদ্যালয়। কি ভাবছেন আপনার নন্দদুলালকে ঐখানে পড়াবেন?

একদম ঠিক ভাবছেন প্রতি মাসে ১০-১২ হাজার খরচ করতে পারলে আপনি ঠিক। কিন্তু গ্রামেগঞ্জে ১০-১২ হাজার টাকা প্রতি মাসে রোজকার করা সোনার পাথর বাটি। যার সামর্থ্য আছে সে যাবে, যার নেই তার দুলালের অবস্থা কী হবে একবার ভেবেছেন? এবার ভাবা শুরু করুন। তবে না ভাবলেও চলবে কারন আপনি তো মাসে মাসে ৫০০ পাচ্ছেন, ফ্রী তে রেশন পাচ্ছেন, ভুরি ভুরি শ্রী প্রকল্প পাচ্ছেন, আপনি তো রাজা সাহেব মশাই।

এবার ধরুন আপনি সেইসব নন্দদুলালের বাবা-মা যার কাছে ১০-১২ কোন ব্যপার নয়। কিন্তু তারপর স্কুল জীবন শেষ হয়ে আপনার নন্দদুলাল বা দুলালী কে আর পড়াবেন না! কী ভাবছেন সরকারি কলেজ? ততদিনে কলেজের হাল বেহাল করে দেওয়া হয়েছে আর শুরু হয়েছে কর্পোরেটদের দাদাগিরি, কী ভালো লাগছে?

রইলো বাকি ঐ কী যেন ক্রেডিট কার্ড। তার বর্তমান অবস্থা আমরা জানি। তবে ভবিষ্যতে এর অবস্থা আরও ভালো হবে এই কথা হাজার বার বলা যায়, কারন জনগণের টাকা কর্পোরেটদের হাতে তুলে দিতে হবে যে, আর এটা তখনই সম্ভব যখন আমার – আপনার সন্তান – সন্ততিরা বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করা হবে।

আর বাকি থাকছে মানব সম্পদ তৈরি ও উন্নয়ন…

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

হোম
জয়েন গ্রুপ
স্থানীয় খবর
জয়েন গ্রুপ
গুগল নিউজ