এসএসকেএম কাণ্ডে পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করে কার্যত দলের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। প্রয়োজন পড়লে বিধায়ক পদ ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিলেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাংবাদিক বৈঠক করে নাম না করে হাসপাতাল চত্ত্বরে গুন্ডামির অভিযোগ আনে। অভিযোগ আনা হয়ে, হাসপাতালের ডাক্তার ও চিকিৎসাকর্মীদের হেনস্থার। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি উল্লেখ করে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ারও হুশিয়ারি দেওয়া হয়। এরপরেই পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করেন মদন মিত্র। নাম না করে দলনেত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “দরকার পড়লে পদ ছেড়ে দেব। একটা তো বিধায়ক পদ। আমি সোনালি গুহ, শুভেন্দু অধিকারী, দীনেশ ত্রিবেদী বা মুকুল রায় নই। আমি মদন মিত্র! উনি আমাকে কী দিয়েছেন?” বলেন, “ওই তো বিধায়কের মাইনে! যদি ছেড়ে দিতে বলেন, ছেড়ে দেব! তেমন হলে রাজনীতিই ছেড়ে দেব! দরকার হলে টিউশনি করে পেট চালাব। যা পড়াশোনা আছে, তাতে মাসে বিশ-তিরিশ হাজার টাকা পেয়ে যাব।” মদন মিত্র আরও বলেন, “আমি নির্বাচিত কামারহাটি থেকে। আমায় তৃণমূল জেতায়নি। তৃণমূল জোড়াফুল প্রতীক দিয়েছে। কিন্তু জিতিয়েছে কামারহাটির জনতা।”
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার রাতে৷ বাইক দুর্ঘটনায় আহত শুভদীপ পাল নামে এক যুবক এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভর্তি নেয়নি। হাসপাতালে উপস্থিত হয়েছিলেন মদন মিত্র৷ তাঁর অভিযোগ, মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অরূপ বিশ্বাসদের হস্তক্ষেপেও ভর্তি নেওয়া হয়নি গুরুতর আহত রোগীকে। পিজি হাসপাতালে ‘দালালরাজ’ চলছে বলে অভিযোগ এনে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন মদন।
এরপরে শনিবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করেন এসএসকেএম হাসপাতালের ডিরেক্টর মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, “কাল রাতে হাসপাতালে যা ঘটেছে, তা অনভিপ্রেত। ইচ্ছাকৃত ভাবে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, নার্সদের হেনস্থা এবং গালিগালাজ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কথা হয়েছে। আমি তাঁকে ঘটনার কথা বিস্তারিত জানিয়েছি। তিনি এ ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা বলেছেন।” সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি। এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ হাসপাতালে দালালরাজের অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ট্রমা কেয়ারে ভেন্টিলেশন শয্যা খালি না থাকায় রোগীকে ভর্তি করা যায়নি। হাসপাতালে গুন্ডামি বরদাস্ত করা হবেনা বলেও জানানো হয়েছে।