খেতে ও খাওয়াতে, দুই ভালোবাসতেন সর্বত্যাগী সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দ। নিজের মানসকন্যা নিবেদিতাকে প্রায়ই বেলুড়ে নেমতন্ন করে নিজে রেঁধে বেড়ে খাওয়াতেন তিনি। তাঁর রান্নার হাতটি যে সরেস ছিল তা বারবার বিভিন্ন গ্রন্থে ও স্মৃতিচারণে উল্লিখিত হয়েছে। নিজের বিদেশ ভ্রমণ কালে একদিক মার্কিন শিষ্য-শিষ্যা ও ভক্তদের বাড়িতে অনেক সময়েই নিজের হাতে বিভিন্ন পদ রেঁধে খাওয়াতেন তিনি। বিদেশে ভারতীয় মশলার আকাল বিবেচনা করে সবসময় নিজের সঙ্গে রাখতেন মশলার কৌটো। খাদ্য রসিক ও রন্ধন পটুত্বের প্রমান তিনি রেখে যান জীবনের অন্তিম দিনেও।
১৯০২ সাল। জুলাইয়ের প্রথম বর্ষার ইলিশ উঠেছিল গঙ্গায়। ৪ঠা জুলাই ইলিশ কেনালেন তিনি। তারপর শারীরিক ভাবে অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও নিজেই বসে গেলেন ইলিশ রাঁধতে। ভাজা, ঝাল, ঝোল সহ তৈরি করলেন একাধিক পদ। ‘লেকচার’ দিতে বিশেষ পছন্দ করতেন, তাই রান্না বিষয়েও রান্না করতে করতেই গুরুভাই শিষ্যদের ‘লেকচার’ দেন। তারপর ভাতের সঙ্গে ইলিশের একাধিক পদ দিয়ে সেরেছিলেন অন্তিম মধ্যাহ্নভোজন। সেই দিন নিজের অতিরিক্ত খাওয়া নিয়ে মজা করে বলেছিলেন, একাদশী করে তাঁর খিদেটা বেশ বেড়েছে। তারপর নিজের ঘরেই সমাধিস্থ হন তিনি। রাত ৯ টা নাগাদ বোঝা যায় ইহলোক ত্যাগ করেছেন বিবেকানন্দ।