রজনীগন্ধা ফুল পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুবই কম। বাঙালির বিয়েবাড়ি তো রজনীগন্ধা ছাড়া ভাবাই যায়না। তাই বাজারে বিয়ের মরশুমে রজনীগন্ধায় হাত দেওয়াও যায় না। রজনীগন্ধা ফুলের গন্দে পাগল কিন্তু দামের কারণে ছোঁয়া বারণ। এমনটা যদি হয় তাহলে চিন্তা কি বাড়িতেই টবে চাষ করে ফেলুন রজনীগন্ধা ফুল। শুনতে অবাক লাগলেও এটা সম্ভব।
জুন মাসের মাঝে এবং জুলায়ের শুরুর দিকে রজনীগন্ধার গাছ লাগানোর সঠিক সময়। রজনীগন্ধা গাছের বাল্ব কিনতে পাওয়া যায় সেগুলি জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে লাগাতে হবে আর তা নাহলে নার্সারি তে চারাগাছ কিনতে পাওয়া যায় তা কিনলেও হবে। আগস্ট মাস থেকে অর্থাৎ মোটামুটি শীতের শুরুর দিকেই গাছটিতে ফুল ফুটতে শুরু করবে। এই কয়েকটা মাস গাছটির খুব ভালোভাবে পরিচর্যা করতে হবে তাহলেই প্রচুর ফুল
রজনীগন্ধা ফুলের চাষের জন্য মাথা বিস্তারিত এমন টব নিতে হবে যাতে রজনীগন্ধার গাছটি ছড়িয়ে উঠতে পারে। চারটি ছিদ্রযুক্ত টব নিতে হবে এবং পাতলা ইঁট কুচি দিয়ে সেগুলি ঢেকে দিতে হবে। যাতে জল দিলে সব বাইরে চলেও না যায় আবার জল জমে গাছের গোড়া পচেও না যেতে পারে। এরপর নুড়ি কাঁকর দিয়ে একটি স্তর বানিয়ে নিতে হবে। এরপর লালচে বালি দিয়েও একটি স্তর বানিয়ে নেবো। এরপর হালকা করে জল ছিটে দিতে হবে। যাতে নুড়ি কাঁকর বালির মাঝের ফাঁকা অংশগুলো ভরাট হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে কাদা মাটি গলে গিয়ে সেখানে পৌঁছে ড্রেনের সিস্টেমটাকে নষ্ট না করতে পারে।
এরপর রজনীগন্ধার জন্য সুন্দরভাবে মাটি তৈরি করে নিতে হবে। তার জন্য নিতে হবে এক ভাগ গার্ডেন সয়েল এক ভাগ নদীর সাদা বালি মাটি এবং বাকি এক ভাগের অর্ধেক ভাগ কোকোপিট ও বাকি অর্ধেক ভাগ ধানের তুষ বা কাঠের গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে মিক্স করে নিতে হবে। গাছের উচ্চতা অনুযায়ী মাটির মিশ্রণটিকে টবের মধ্যে ভরাট করে নিতে হবে এবং গাছটিকে মাটির মধ্যে লাগিয়ে দিতে হবে। এরপর উপর থেকে মাটি দিয়ে টবটা ভরাট করে নিতে হবে। গাছ প্রতিষ্ঠান হয়ে গেলে মাটির শুষ্কতা অনুযায়ী টবে জল দিতে হবে। ৫ – ৬ ঘণ্টা অবশ্যই সূর্যের আলোর মধ্যে টবটিকে রাখতে হবে। তবে হ্যাঁ একটি কথা মাথায় রাখতে হবে, অতিরিক্ত রোদে গাছটিকে রাখলে গাছটির সবুজ ভাবটি নষ্ট হয়ে গাছটি লাল হয়ে যাবে এবং গাছটি শুকিয়ে মরে যেতেও পারে। অর্গানিক সার হিসেবে সর্ষের খোল পচানো জল অবশ্যই দিতে পারেন ১৮ – ২০ দিন পর পর। এবং দুই চামচ করে পাকা কলার খোসাকে বেটে অবশ্যই দেবেন। এই পদ্ধতিতে রজনীগন্ধার চাষ করলে এবং পরিচর্যা করলে গাছে অনেক ফুল হবে।