জঙ্গলমহলের বাঁকুড়ার রানীবাঁধ, রাইপুর, সারেঙ্গা পুরুলিয়ার বিভিন্ন স্থান, কংসবতীর তীরবর্তী অঞ্চলে দেখা মেলে জৈন ধর্মের শিল্পকর্ম, দেউল মূর্তি প্রভৃতির। কিন্তু এই শিল্পের স্রষ্টা কারা তার সন্ধান মেলেনি। অবশেষে দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গলমহলের নৃতত্ত্ব ও পুরাতত্ত্ব নিয়ে অনুসন্ধান চালানো মধুসূদন মাহাতো সেই শিল্প স্রষ্টাদের উত্তরপুরুষদের সন্ধান পেলেন রাইপুরের ভগরা গ্রামে৷ এখনও সেখানে বাস করছেন জৈন ধর্মের সরাগ গোষ্ঠীর মানুষজন।
সেও এক সময় ছিল। জৈন ধর্মের সরাগ গোষ্ঠীর শিল্পীদের হাতে কংসাবতীর উপত্যকায় সৃষ্টি হয়েছিল বিভিন্ন জৈন শিল্প নিদর্শন। এখন সেই সুখের দিন কালের গহ্বরে। রাইপুরের হলুদকানালি মোড় থেকে চার কিলোমিটার উত্তরে ভগরা গ্রামে সেই শিল্পীদের উত্তরসূরিরা জীবিকার প্রয়োজনে কংসাবতীর পাথর কেটে গড়ে তোলেন শিল-নোড়া-শিবলিঙ্গ।ইতিহাসে চাপা পড়ে গিয়েছিল এই শিল্পীদের অস্তিত্ব। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর বৃহস্পতিবার তাদের সন্ধান পেলেন নৃতত্ত্ব ও পুরাতত্ত্ব নিয়ে অনুসন্ধান চালানো মধুসূদন মাহাতো।
শিল্পের দৈন্যতার সঙ্গে অর্থনৈতিক দৈন্যতা ক্রমশ থাবা বসিয়েছে। পাথরের শিল, নোড়া, জাতা, বেলন, চাকি তৈরী করে এখন পেট চালান একদা জঙ্গলমহলের শিল্পকে সমৃদ্ধ করা শিল্পীদের উত্তরসূরীরা৷ অনটন এলেও এখনও সৃষ্টিসত্ত্বাকে বাঁচিয়ে রাখা শিল্পীদের বর্তমান প্রজন্ম আর চায় না এই সৃষ্টিকে পেশা করতে। ফলে সন্ধান মিললেও অদূর ভবিষ্যতে এক শতাব্দী প্রাচীন শিল্পী গোষ্ঠীর শৈল্পিক অবলুপ্তি প্রায় অবশ্যম্ভাবী।