ভূত চতুর্দশীর দিন যম প্রদীপ জ্বালানো হয় ঘরে ঘরে। এইদিনটি যম চতুর্দশী নামেও পরিচিত। কালীপুজোর আগের রাতে কৃষ্ণপক্ষের ১৪তম দিন অর্থাৎ অমাবস্যার আগের দিন ভূত চতুর্দশী। ১৪ টি প্রদীপ জ্বালানো হয় ভূত চতুর্দশীর সন্ধ্যায়। খাওয়া হয় গুলঞ্চ, শুষণী, হিলঞ্চ, জয়ন্তী, ওল, বেতো, সরষে, নিম, শাঞ্চে, কালকাসুন্দে, পলতা, ভাটপাতা, কেঁউ, এবং শৌলফ -মোট ১৪টি শাক। এই যম চতুর্দশী নামের পিছনে রয়েছে পৌরাণিক কাহিনী।
একদা যম ও যমদূতেদের কথোপকথন হচ্ছিল। যমরাজ যমদূতেদের প্রশ্ন করেন, পৃথিবীলোকে মানুষের প্রাণ হরণ কালে কখনও তাঁরা আবেগের বশবর্তী হয়েছেন কিনা। সেই সময়ে এক যমদূত যমরাজকে এক কাহিনী বলেন। পুরাকালে হেম নামে এক রাজা ছিলেন। রাণী সুন্দর পুত্র সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর জ্যোতিষীরা গণনা করে জানান, বিবাহের চার দিন পর রাজকুমারের মৃত্যু হবে। এই ভবিষ্যদ্বাণী শোনার পর রাজা রাজকুমারকে যমুনা তীরের একটি গুহায় ব্রহ্মচারী হিসেবে লালন পালন করতে শুরু করেন। যথা সময়ে যুবক হন রাজকুমার। একদিন যমুনা তীরে মহারাজা হংসের কন্যার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় তাঁর। পরস্পরের প্রতি তাঁরা আকৃষ্ট হন এবং গন্ধর্ব বিবাহ করেন। জ্যোতিষ গণনা অনুযায়ী বিয়ের ৪ দিন পরেই রাজকুমারের মৃত্যু হয়। স্বামীর মৃত্যুতে শোকার্ত রাজকুমারী বিলাপ শুরু করেন। যমদূত যমরাজকে জানান, সেই নববিবাহিতার বিলাপ শুনে তাঁদের হৃদয় আদ্র হয়ে উঠেছিল। কিন্তু তবুও তাঁরা তাদের কর্তব্য সম্পন্ন করেন।
কাহিনী সম্পূর্ণ হলে এক যমদূত যমরাজের কাছে অকাল মৃত্যুকে প্রতিহত করার উপায় জানতে চান। সেই সময় যমরাজ জানান, নরক চতুর্দশীর দীপদান করলে অকাল মৃত্যুর ভয় থাকে না। বিশ্বাসী মানুষজন তাই অকালমৃত্যুকে প্রতিহত করতে যম চতুর্দশী অর্থাৎ ভূত চতুর্দশীর দিন যম দীপ প্রজ্জ্বলিত করেন।