জেনে নিন ওল কচু চাষ কিভাবে করবেন

জেনে নিন ওল কচু চাষ কিভাবে করবেন

মাটির নিচে জন্মানো একটি সবজি হলো ওল কচু। এতে প্রচুর ভিটামিন রয়েছে। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই সবজি টি তরকারি হিসেবে রান্না করে খাওয়া হয়ে থাকে। আজ আমরা আপনাদের সাথে ওল কচু চাষের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব।

জলবায়ু ও মাটি(Climate & soil):

ওল কচু চাষে দোআঁশ, বেলে দোআঁশ , এটেল দোআঁশ ইত্যাদি মাটি নির্বাচন করতে হবে। মাটিতে জল নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা থাকতে হবে। জমিতে ছায়া থাকা যাবে না। ছায়ায় এ সবজি ভালো হয় না। গাছের ভালো বৃদ্ধির জন্য ২৫-৩৫ ডিগ্রী সে তাপমাত্রা হলে খুব ভালো হয় এবং বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১০০-১৫০ সেমি হওয়া ভালো।

রোপনের সময়ঃ
ওল কচুর চারা রোপনের উপযুক্ত সময় হলো মাঘ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ফাল্গুন মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত। তবে চৈত্র মাসের মাঝামাঝি থেকে বৈশাখ মাসে মাঝামাঝি তে ও লাগানো যায়। কিন্তু এর পরে রোপন করলে ফলন আর ভালো হয় না।

জমি তৈরি ও চারা রোপনঃ
জমি তৈরি করার জন্য জমি চাষ ও মই দিয়ে নিতে হবে। মাটি ঝুরঝুরা করে নিতে হবে। জমি আগাছা মুক্ত করে নিতে হবে। গোড়ার চার পাশে মাটি চেপে দিতে হবে। চারা রোপন করার সময় একটু বড় জাতের বাছাই করা উচিত। জাত বড় হলে ফলন ভালো হয়। ৪০০-৮০০ গ্রামের বেছন বাছাই করা উচিত। বেছন যদি ছোট হয় তাহলে ৪০-৫০ সেমি দূরত্বে রোপন করতে হবে আর যদি মাঝারি হয় তাহলে ৭০-৮০ সেমি দূরত্বে রোপন করতে হবে। যদি বড় আকৃতির হয় তবে ১-১.৫ মিটার দূরত্বে রোপন করতে হবে।

বীজ বপনের পদ্ধতিঃ
ওলের বীজ কিছুদিন রোদে দিয়ে গরম করে নিলে অঙ্কুরোদগম ভালো হয়। বীজ বপন করার আগে বীজ শোধন করে নেওয়া উচিত। ওলের মুখী রোপন করার জন্য সারি তৈরি করতে হবে। লাঙল দিয়ে সারি তৈরি করে তারপর বীজ বপন করতে হবে নির্দিষ্ট দূরত্ব অনুযায়ী। বীজের আকার থেকে গর্তের আকার বড় হতে হবে।

সার প্রয়োগঃ
ভালো ফলন পেতে হলে প্রয়োজনীয় সার প্রয়োগ করতে হবে জমিতে। জমিতে চারা গজানোর ২০-২৫ দিন প্রতি শতকে গোবর সার ০-৫ কেজি, ইউরিয়া ০.৩ কেজি মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। গর্তের সংখ্যার উপর নির্ভর করে কি পরিমান সার দিতে হবে।
বাকি টুকু দিতে হবে গর্তে , যেখানে বীজ বপন করা হবে। ইউরিয়া সার দুই কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম কিস্তি হলো বীজ রোপন করার ৮০-৮৫ দিন পর এবং দ্বিতীয় কিস্তি হলো ১১০-১১৫ দিন পর।

রোগবালাই ও দমন:
ওল কচু চাষে তেমন কোনো প্রকার রোগ দেখা যায় না। তবে এতে পাতা ও কান্ড পচা রোগ দেখা দিতে পারে। এর জন্য ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করা যেতে পারে। গাছের গোড়া পচন রোগ ফসলের ক্ষতি করে । এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বীজ শোধন করে নিতে হবে। বীজ শোধন করার জন্য কার্বেন্ডাজিব প্রয়োগ করতে হবে। কলার রট নামক আরেকটি রোগ দেখা যায় ওল কচু জমিতে। কলার রট নামক রোগ আক্রমন করলে আক্রান্ত গাছ সরিয়ে ফেলতে হবে। জমিতে ভিটাভ্যাক্স ২০০ প্রয়োগ করতে হবে প্রতি লিটার জলের সাথে ২ গ্রাম মিশিয়ে। তারপর তা জমিতে জল দেয়া যন্ত্রের সাহায্যে প্রয়োগ করতে হবে।

ফসল সংগ্রহঃ
চাষ করার ৭-৯ মাস পরে গাছের পাতা ৮০% হলুদ হয়ে গেলে ফসল পরিপক্ক হয়েছে বুঝতে হবে। তখন ওল সংগ্রহ করতে হবে। ওল গাছের চার পাশে যা কান্ড থাকবে সেগুলো রেখে দিতে হবে যাতে পরের বছর সেগুলো দিয়ে বেছন তৈরি করা যায়

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

হোম
জয়েন গ্রুপ
স্থানীয় খবর
জয়েন গ্রুপ
গুগল নিউজ