কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ভারতের বোলিং ঝড়ে বিধ্বস্ত হল দক্ষিণ আফ্রিকা! এই বারের বিশ্বকাপে এতদিন অসাধারণ প্রদর্শন করা ও অন্যতম শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ টপকাতে পারলো না ১০০ রানের গন্ডিও। ২৪৩ রানে তাদের হারিয়ে ৮ ম্যাচের ৮টিতেই জয় ছিনিয়ে নিলেন রোহিত শর্মারা। সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠে গেল এটিই বিশ্বকাপের ইতিহাসে ভারতের সর্বকালের সেরা বোলিং আক্রমণ কিনা!
এইবারের বিশ্বকাপে প্রথম থেকেই ভালো বল করছেন ভারতীয় বোলাররা। কিন্তু বাংলাদেশ ম্যাচে হার্দিক পান্ডিয়া চোট পাওয়ার পর একজন অতিরিক্ত বোলার হিসাবে শামি আসেন একাদশে। তারপর থেকে ভারতীয় বোলিং আক্রমণ যেন বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে! নতুন বলে কৃপণ বোলিং করছেন জসপ্রীত বুমরা! এতদিন বিশেষ ভালো প্রদর্শন না থাকলেও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ফর্মে ফিরেছেন মহম্মদ সিরাজ! আর নিউজিল্যান্ড ম্যাচে সুযোগ পাওয়া থেকেই শামি নির্মম সুন্দর। অসাধারণ সিম পজিশন ও দুই দিকে সুইং করে বিভ্রান্ত করে দিচ্ছেন ব্যাটারদের। শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৫ উইকেট, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪ উইকেট। এবার ইডেনের ঘরের মাঠে স্পিনারদের দাপটের মাঝেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রথম ৪টি ম্যাচে শামিকে একাদশে না রাখা বোধহয় ভুল সিদ্ধান্ত ছিল!
রবিবাসরীয় দুপুরের ইডেনে শুরুটা ছিল বিরাট কোহলির (১০১ নট আউট)। জন্মদিনে শতরান করে শচীনের ৪৯টি ওয়ান ডে সেঞ্চুরির রেকর্ড ছুঁলেন তিনি। বল থমকে আসা পিচে দিলেন চরম ধৈর্য্যের পরীক্ষা। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করলেন শ্রেয়স আইয়ার (৭৭), জাদেজা (২৯*), সূর্যকুমার (২২)। দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ৩২৭ রানের লক্ষ্য রেখে বল হাতে ঝড় তুললেন জাদেজা, শামিরা। ৫ উইকেট নিলেন জাদেজা। ২ উইকেট শামি। ২ উইকেট কুলদীপ ও ১টি সিরাজ। মাত্র ৮৩ রানে অল উইকেট ডাউন হয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার।
এই দক্ষিণ আফ্রিকা ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে মাত্র ১টি ম্যাচ হেরেছিল। অবসরের আগে বিধ্বংসী ফর্মে কুইন্টন ডি কক। বিশ্বকাপে ৩টি শতরান করে ফেলেছিলেন আগেই। কিন্তু তাঁকে ৬ রানেই ফেরত পাঠিয়ে প্রথম ধাক্কা দেন সিরাজ। কৃপণ বোলিং করলেন বুমরা। তারপর নিজের ঘরের মাঠেও ফের ভালো বোলিং করলেন শামি। মারাত্মক হয়ে উঠলেন জাদেজা। তাঁর বল বুঝেই উঠে পারলেন না দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা। ২৪৩ রানে তাদের হারিয়ে বিশ্বকাপে টানা ৮ ম্যাচে জয় সম্পন্ন করলো ভারত।