বাঁকুড়ার রানিবাঁধের মৌলাগ্রামে শালপাতা ও বাবুই দড়ি দিয়ে তৈরি হওয়া গ্রীন ব্যাগ নতুন বিকল্প হতে পারে পরিবেশ দূষণকারী পলিথিন ব্যাগের। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের হাত ধরে পরিবেশ বান্ধব এই ব্যাগ জঙ্গলমহলকে শিল্পের নতুন দিশা দেখাচ্ছে।
১ জুলাই থেকে সারা দেশে নিষিদ্ধ হয়েছে এক্সপ্যান্ডেড পলিস্টিরিন, পলিস্টিরিন-সহ সমস্ত একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের উৎপাদন, বিক্রি, আমদানি, বিতরণ। বাজারের বা দোকানে গিয়ে জিনিস বয়ে নিয়ে আসার জন্য পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ। সেক্ষেত্রে শালপাতা ও বাবুই দড়ি থেকে তৈরি ২ টাকা দামের পরিবেশ বান্ধব গ্রীন ব্যাগ জঙ্গলমহলের অর্থনীতিতে নুতন অগ্রদূত হয়ে উঠতে পারে। শিল্প ও কর্ম সংস্থানে অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে থাকলেও জঙ্গলমহল প্রাকৃতিক ভাবে সমৃদ্ধ। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা প্রথমে কাঁচা শালপাতা জঙ্গল থেকে সংগ্রহ করে শুকিয়ে নিচ্ছেন। তারপর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে পাওয়া বিশেষ ধরনের সেলাই মেশিনে সেলাই করে তৈরি হচ্ছে গ্রীন ব্যাগ।
একটা সময়ে জঙ্গলমহলের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা যুক্ত হচ্ছিলেন শালপাতার থালা বাটি তৈরির সঙ্গে। কিন্তু করোনা কালে লকডাউনে কারনে বাজারে চাহিদা কমে যায়। ফলে মহিলাদের অর্থনৈতিক ভাবে স্বনির্ভর হয়ে ওঠার বিষয়টি বিঘ্নিত হচ্ছিল। এখন সেখানকার মোট ২০ টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ১০০-১৫০ জন মহিলা গ্রীন ব্যাগ তৈরির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত হয়েছেন। সেই সঙ্গে বাজারে বর্তমানে পলিথিনের ক্যারি ব্যাগ নিষিদ্ধ হওয়ায় এই পরিবেশ বান্ধব ব্যাগের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যে রানিবাঁধ, খাতরা, ঝিলিমিলি এলাকার বাজারে দোকানদাররা জিনিস দেওয়ার জন্য এই ব্যাগ ব্যবহার শুরু করেছেন। যদিও প্রাথমিক ভাবে সরকারি অনুমোদন নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এই ব্যাগ তৈরি শুরু হয়েছে। তবুও এক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। যে সেলাই মেশিন পাতা সেলাইয়ের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে তা যথেষ্ট কার্যকরী নয়। তাছাড়া পাতা প্রেস করার জন্য মেশিনেরও প্রয়োজন রয়েছে। প্রয়োজন রয়েছে উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন যন্ত্রপাতিও। কিন্তু তবুও অনেক নেই এর মাঝেও এই গ্রীন ব্যাগকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দের স্বপ্ন দেখছেন জঙ্গলমহলের মহিলারা।