কারো সর্বনাশ, কারো পৌষ মাস! উপলক্ষ্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। তার ফলে ভারতের সামনে উন্মুক্ত হতে চলেছে কৃষি পণ্যের এক বিপুল বৈদেশিক বাজার। যার অন্যতম হল গম। আর ইউরোপের যুদ্ধকালীন অবস্থায় সেই বাজারকে কুক্ষিগত করতে তৎপর হচ্ছে ভারত।
পৃথিবীতে গম উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে চীনের পরেই আমাদের স্থান। কিন্তু গমের বৈদেশিক রপ্তানিযোগ্য বাজারের প্রথম সারিতে ভারত নেই। সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি গম রপ্তানি করে রাশিয়া। এছাড়া উল্লেখযোগ্য স্থানে রয়েছে ‘ইউরোপের রুটির ঝুড়ি’ হিসেবে পরিচিত ইউক্রেন। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যুযুধান এই দুই দেশকে কেন্দ্র করে গম রপ্তানিতে প্রভাব পড়েছে। ইতিমধ্যেই আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। অন্যদিকে রাশিয়ার আক্রমণে বিধ্বস্ত ইউক্রেন রপ্তানি বাণিজ্যকে নিয়ন্ত্রণের মতো পরিসরে নেই। ফলে বিশ্ববাজারে যোগান-চাহিদার অর্থনৈতিক তত্ত্বকে প্রাধান্য দিয়ে ক্রমবর্ধমান গমের মূল্য। এখন সেই চাহিদাকে হাতিয়ার করেই গমের রপ্তানি-বাজারে প্রভাব বিস্তার করতে তৎপর হয়েছে ভারত, এমনটাই খবর সূত্রের।
সূত্রের খবর, সরকারের তরফে রপ্তানি বিভাগ ও বন্দর কর্তৃপক্ষকে গম রপ্তানিকে বিশেষ প্রাধান্য দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারের তরফে মন্ত্রিসভা, রাজ্য সরকার, বন্দর ও রেল কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন সংস্থা এবং বড় রপ্তানি সংস্থাগুলির মাধ্যমে সমন্বয়সাধনকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার উচ্চ খাদ্যমূল্য সম্পন্ন গম রপ্তানি করে বিশ্বকে উচ্চ মানের গম সম্পর্কে আশ্বস্ত করতে চাইছে এবং স্থায়ী বাজার তৈরিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই সরকারি ছাড়পত্রপ্রাপ্ত ২১৩ টি পরীক্ষাগারকে রপ্তানিযোগ্য গমের গুণমান পরীক্ষা করতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
এখন ভারত যদি গম রপ্তানির ক্ষেত্রে বাজার দখল করতে পারে, তাহলে তার প্রভাব সরাসরি দেশের কৃষি বাণিজ্যে পরিলক্ষিত হবে। কৃষকদের গম উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে উৎসাহিত করবে। সেই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার আগমন দেশীয় কৃষি অর্থনীতিতেও সদর্থক প্রভাব ফেলবে। এবার যুদ্ধের পরিস্থিতিতে গমের বিশ্ব বাজারে ভারত কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারে তা অবলোকন যোগ্য।