‘মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা!’ বাঙালির গর্বের বাংলা ভাষা, যে ভাষার জন্য বাঙলির লড়াই আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত। সেই ভাষার জন্য শহীদদের আত্মত্যাগের দিন আজ ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’।
ঐতিহাসিক ২১ ফেব্রুয়ারি, সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রূপে পালিত হয়। ইতিহাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন, জন্ম। তখন সদ্য স্বাধীনতা এসেছে ভারতীয় উপমহাদেশে। জন্ম হয়েছে পাকিস্তান ও ভারতের। দগদগে দেশভাগের ক্ষত। ভারতে পূর্ব পাশেই বঙ্গদেশ দুই টুকরো হয়ে সৃষ্টি হয়েছে পূর্ব পাকিস্তানের। তার উপর সম্পূর্ণ প্রশাসনিক কর্তৃত্ব মূল পাকিস্তান ভূখণ্ডের। যার সাংস্কৃতিক, ভাষাগত, ঐতিহ্য পার্থক্য বাংলাভাষী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। রাষ্ট্র ভাষা উর্দু। বাংলা ভাষার রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দাবি করে সেখানে শুরু হল ভাষা আন্দোলন। ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে ভাষা আন্দোলনের উপর চললো পাকিস্তান সরকারের গুলি। মাতৃভাষার অধিকারের জন্য শহীদ হলেন রফিক, সালাম, আব্দুল জব্বার, শফিউল, সালাম, বরকতরা। জন্ম নিলো ভাষা থেকে স্বতন্ত্র রাষ্ট্রের চেতনা৷ শুরু হল দীর্ঘ দুই দশকের রক্তক্ষয়ী আন্দোলন।
এরপরের ইতিহাস বিশ্ববিদিত। বাঙালির স্বতন্ত্রতার আন্দোলন প্রচুর আত্মত্যাগ ও রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশকে গত শতাব্দীর সাতের দশকে এনে দিল স্বাধীনতা। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। এরপর বাংলাদেশ ২০১০ সালের ২১ অক্টোবর জাতিসংঘের ৬৫তম অধিবেশনে বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব দেয়। যা সবার সমর্থনে গৃহীত হওয়ার পরেই ভাষা শহীদদের মাতৃভাষার জন্য আত্মত্যাগের দিন, বাঙালির গর্বের ‘২১ শে ফেব্রুয়ারি’ হয়ে ওঠে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’।