মঙ্গলবার জেলা আদালতের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুললেন ‘রোজ রোজ কেন চাকরি বাতিল করা হচ্ছে’। তাঁর আর্জি, “কথায় কথায় লোকের চাকরি খাবেন না!”
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে তোলপাড় রাজ্য। হাইকোর্টের নির্দেশে বাতিল হচ্ছে হাজার হাজার চাকরি। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী থেকে তৃণমূল বিধায়ক সহ জেল বন্দি অনেকেই। বিরোধীরা আঙুল তুলছেন শাসক দলের দিকে। সেই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে স্বাধীনতা সংগ্রামী অরবিন্দ ঘোষের মূর্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ড নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বিচারপতিদের রায়কে সম্মান জানাই। আমি অধিকার কাড়ার পক্ষে নই। আমি অধিকার দেওয়ার পক্ষে। যেটা আইনত স্বীকৃত, সেই অধিকারের কথা বলছি।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমি যদি অন্যায় করি, আপনারা গালে দুটো চড় মারুন। আমি কিচ্ছু মনে করব না। যদি আমি দেখি, ‘ইয়েস আমি গিল্টি।’ আমি জীবনে জেনেশুনে কোনও অন্যায় করিনি। আমি ক্ষমতায় আসার পর একটাও সিপিএম ক্যাডারের চাকরি খাইনি। তা হলে তোমরা কেন খাচ্ছ? দেওয়ার ক্ষমতা নেই। কাড়বার ক্ষমতা আছে!’’
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “সবাই আমার সরকারের ক্যাডার নন। সরকারের ক্যাডার হলেও তাঁরা কোনও না কোনও দলের সমর্থক। তাই সেখানে বসে যদি কেউ অন্যায় করেন, তিনি আমার দলেরও হন, আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।” তাঁর কথায়, “রোজ কথায় কথায় ৩ হাজার চাকরি বাদ। ৪ হাজার চাকরি বাদ! কেউ যদি নিচুতলায় অন্যায় করেও থাকে, সংশোধনের সুযোগ পাওয়া উচিত।” তিনি বলেন, ‘‘গতকালও দু’জনের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। আমি ভেবে দেখতে বলব। কেউ যদি ভুল করে থাকেন, তাঁর দায় ওঁরা নেবেন কেন? আজ চাকরি করে বলে দু’জন ছেলেমেয়ে বিয়ে করেছেন। তাঁর বাবা-মাকে দেখাশোনা করতে পারছেন। হঠাৎ করে চাকরিটা চলে গেলে তাঁরা খাবেন কী!”
তিনি বলেন, “যাঁরা অন্যায় করেছে, অ্যাকশন নিন। টেক স্ট্রং অ্যাকশন। আমার কোনও দয়া নেই তাঁদের জন্য। কিন্তু ছেলেমেয়েরা যাতে তার শিকার না হয়, সেটা দেখুন। তাঁদের চাকরিটা আইন অনুযায়ী ফিরিয়ে দিন। দরকার হলে তিনি আবার পরীক্ষা নিন। কোর্ট যদি অন্য কোনও ব্যবস্থা করতে বলে, আমরা সেটাও করে দেব। সিদ্ধান্ত আপনাদের।” মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি, “এটা আমার মনের ভাবনা। কথায় কথায় লোকের চাকরি খাবেন না।”