সারা দেশে বিভিন্ন নামে পরিচিত হলেও বাঙালির পৌষ সংক্রান্তি তথা মকরের আড়ালেও চলে আসছে একাধিক পৌরাণিক গল্প, লোককথা। যদিও আসলে এটি ফসলের উৎসব। শীতের প্রাক্কালে অগ্রহায়ণ মাসে মাঠ জুড়ে উঠেছে নতুন ধান। তা থেকে তৈরি চাল এবার বছর ভরের সঞ্চয় ছিল এক সময়ে। সেই সঙ্গে শুরু হবে শীতকালীন চাষ। নতুন ফসল ও নতুন চাষের সেই উদযাপনই আজ মকর সংক্রান্তি। যদিও এনিয়ে একাধিক পৌরাণিক গল্প প্রচলিত রয়েছে।
সাধারণ ভাবে পৌষ মাসের শেষে এই উৎসব পালিত হয়। বলা হয়, মকর সংক্রান্তির তিথিতেই নাকি মহাভারতের পিতামহ ভীষ্ম শরশয্যায় ইচ্ছামৃত্যু গ্রহণ করেছিলেন। অন্য মত অনুযায়ী, এই দিনই দেবতাদের সঙ্গে অসুরদের যুদ্ধ শেষ হয়েছিল। অসুরদের বধ করে তাঁদের কাটা মুন্ডু মন্দিরা পর্বতে পুঁতে দিয়েছিলেন বিষ্ণু। তাই এই দিনটি অশুভ শক্তির বিনাস হয়ে শুভ শক্তির প্রকাশ হিসেবেও অনেকে পালন করেন।
মকর সংক্রান্তিকে কেন্দ্র করেই হয়েছে অনেক প্রচলিত লোককথাও। মকর রাশির অধিপতি নাকি সূর্যের পুত্র শনি। সংক্রান্তি অর্থ সঞ্চার বা গমন করা। বলা হয়, ঐ দিনেই নাকি সূর্য পুত্র শনির গৃহে যাত্রা করেছিলেন। আবার জ্যোতিষ শাস্ত্র বলে অন্য কথা। সূর্য এ দিন ধনু থেকে মকর রাশিতে প্রবেশ করে। সূর্যের এক রাশি হতে অন্য রাশিতে সঞ্চার বা গমন করাকেও সংক্রান্তি বলা হয়। আবার শাস্ত্র মতে, সূর্য হল আত্মা, পিতা, মান-সম্মান, সাফল্য, উন্নতির প্রতীক। মকর সংক্রান্তির দিন পুজিত হন সূর্য্যদেব। তাই মকর সংক্রান্তির দিন পুণ্যলাভের জন্য পবিত্র নদীতে স্নানের রীতি বহু বছর ধরে প্রচলিত। পুণ্যলাভের জন্য লাখ লাখ মানুষ সাগরের জলে ডুব দেন, ভিড় করে গঙ্গাসাগরে।