এবার প্রশ্ন চিহ্ন রাজ্য পুলিশে কনস্টেবল নিয়োগ নিয়ে! নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ এনে কলকাতা হাইকোর্টে মামলার প্রেক্ষিতে বুধবার ৮৪১৯ জন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের দ্বিতীয় প্যানেল বাতিল করলো কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। এর ফলে কয়েকশো প্রার্থীর চাকরি বাতিল হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশ কনস্টেবলের ৮৪১৯ পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে। প্রার্থী বাছাই হয় পর্যায়ক্রমে প্রিলিমিনারি লিখিত পরীক্ষা, শারীরিক মাপজোক, শারীরিক দক্ষতা পরীক্ষা, ৮৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা ও পরিশেষে ১৫ নম্বরের ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে। ২০১৯ সালের ৪ অগস্ট প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয়। ২০২০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ফাইনাল লিখিত পরীক্ষা হয়। কিন্তু ঐ পরীক্ষার কোনও ফল প্রকাশ করা হয়নি বোর্ডের তরফে৷ পরিবর্তে বোর্ড ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ইন্টারভিউয়ের জন্য রোল নম্বর ব্যবহার করে অ্যাডমিট কার্ড সংগ্রহ করার নির্দেশ দেয়। জানানো হয়, যে প্রার্থীরা রোল নম্বর ব্যবহার করে অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন না, তাঁরা অনুত্তীর্ণ। ১২৭৮৬ জনকে ২০২০ সালের ১২ অগস্ট থেকে ইন্টারভিউয়ে ডাকা হয়।
অভিযোগ, ইন্টারভিউ নেওয়ার ক’দিন আগে অনেক প্রার্থীকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করে ইন্টারভিউ বোর্ডে কারা আছেন, তাঁদের নাম ও পরিচয় জানানো৷ দাবি, তা নিয়ম বিরুদ্ধ। ২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর সল্টলেকের অফিসে ৮৪১৯ জনের মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। প্রার্থীদের লিখিত এবং ইন্টারভিউয়ে প্রাপ্ত নম্বরের উল্লেখ ছিল না মেধাতালিকায়। সংরক্ষিত প্রার্থীদের কোনও তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। এছাড়া ওয়েবসাইটে চাকরিপ্রার্থীরা শুধুমাত্র নিজেদের নম্বর দেখতে পেরেছেন।
নিয়োগে অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনে ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালে মামলা হয় ২০২১ সালের মার্চ মাসে। সমগ্র নিয়োগ বাতিলের আবেদন জানানো হয়। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ট্রাইবুনাল বোর্ডকে নির্দেশ দেয় নতুন করে প্যানেল প্রকাশ করতে ও সংরক্ষিত প্রার্থীদের আলাদা তালিকা প্রকাশ করতে। এরপরে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ট্রাইবুনালের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন কয়েকশো প্রার্থী। তাঁরা সমগ্র নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করার এবং চূড়ান্ত পরীক্ষার ওএমআর শিট, উত্তরপত্র প্রকাশের দাবি জানান। সেই মামলাতেই বুধবার ট্রাইবুনালের নির্দেশে প্রকাশিত দ্বিতীয় প্যানেল বাতিল করে প্রথম প্যানেল বহাল রাখলো আদালত।