আসন্ন বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব, দুর্গোৎসব(Durga Puja)। সারা রাজ্যে, দেশে বিদেশে তা পালিত হবে মহাসমারোহে। পুজো বলতেই মফস্বলের বাঙালি আকৃষ্ট হয়ে কলকাতার পুজো গুলোর প্রতি। বিশেষত বিগত কিছু বছরে থিমের পুজো বিশেষ ভাবে জায়গা করে নিয়েছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে। পঞ্চমী থেকে কলকাতার বিখ্যাত পুজোগুলি দেখতে রাস্তায় ঢল নামে মানুষের। তালমিলিয়ে আধাশহর, জেলা শহর ও মফস্বলগুলিও থিমের পুজোয় মেতে উঠেছে। কিন্তু আমাদের বাংলার গ্রামগুলির আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে কত বিখ্যাত, পরিচিত, অপরিচিত পুজো। বিচিত্র তাদের নিয়ম, রীতি। এমনকি জাঁকজমকেও মায়ের আরাধনায় পিছিয়ে থাকেনা গ্রাম বাংলার পুজোগুলি(Gram Banglar Durga Puja)।
তেমনই এক পুজো বীরভূমের সিউড়ির বসাক বাড়ির। যদিও এই পুজোর সূত্রপাত ওপার বাংলায়। বৈষ্ণব মতে বাংলাদেশের ঢাকার ধামরাই গ্রামে শুরু হয়ে ছিল বসাক বাড়ির পুজো। তারপর দেশভাগ। ছিন্নমূল হয়ে দুই বাংলায় ছড়িয়ে পড়েন বাঙলিরা। বাংলাদেশ থেকে বসাক পরিবার বীরভূমের সিউড়িতে এসে বসত শুরু করেন৷ তারপর সিউড়িতেই শুরু হয়ে বৈষ্ণব মতে মায়ের আরাধনা। বজায় থাকে সাবেক পুজোর ঐতিহ্য।
সিউড়ির বসাক বাড়িতে পঞ্চমী থেকেই শুরু হয়ে যায় মাতৃবন্দনা। দেশভাগের সময় বাংলাদেশ অর্থাৎ তৎকালীন পূর্ববঙ্গ থেকে বসাক বাড়ির পূর্বপুরুষরা সঙ্গে এনে ছিলেন মনসা দেবীর ঘট৷ রীতি মেনে পঞ্চমীতে প্রথমে হয় মনসা দেবীর পুজো৷ তারপর চলে নিয়ম মতে দেবী মহামায়ার আরাধনা। বৈষ্ণব মতে পুজো হওয়ায় পঞ্চমী থেকে দশমী বসাক বাড়িতে প্রবেশ করে না কোনো রকম আমিষ খাবার৷ আগে মাটির প্রতিমায় পুজা হলেও এখন দেবী ধাতুমূর্তিতে পূজিতা হন। ফলে হয় না দশমীর প্রতিমা নিরঞ্জনও। দশমীতে হয় শুধুমাত্র ঘট বিসর্জন। বসাক বাড়ির এই পুজো দুই বাংলার সাবেক ঐতিহ্য বহন করে চলেছে প্রায় ৩০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে৷