Mahalaya 2023 : মহালয়ার সকালে মহিষাসুরমর্দিনী! বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গীতিআলেখ্যের ইতিহাস

Mahalaya 2023 : মহালয়ার সকালে মহিষাসুরমর্দিনী! বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গীতিআলেখ্যের ইতিহাস

মহালয়ার ভোর! আকাশে বাতাসে শিউলি ফুলের সুবাস! তারই মধ্যে বেজে ওঠে “আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোকমঞ্জির…”। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের উদাত্ত কন্ঠে আলেখ্য পাঠ। মহিষাসুরমর্দিনী! মহালয়ার সদ্য ঘুম ভাঙা ভোরে এই কন্ঠ আর শারদীয়া যেন সমার্থক। এই পাঠই বাঙালির কাছে বার্তা আনে “পুজো এসে গিয়েছে”! এই মহিষাসুরমর্দিনী বেজে ওঠার পিছনে রয়েছে এক বিস্মৃত ইতিহাস।

তখন দেশে ব্রিটিশ শাসন। ১৯৩১- ৩২ সাল নাগাদ। আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্রের তৎকালীন অধিকর্তা নৃপেন্দ্রনাথ মজুমদারের কাছে বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র, বেতার জগৎ পত্রিকার সম্পাদক প্রেমাঙ্কুর আতর্থী প্রমুখরা মহালয়ার প্রভাতে একটি আলেখ্য সম্প্রচারের প্রস্তাব দেন। প্রস্তাব গৃহীত হলে শুরু হয় প্রস্তুতি। বাণীকুমার তথা বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য মার্কন্ডেয় পুরাণ থেকে চণ্ডী স্তোত্র নিয়ে রচনা করেছিলেন একটি আলেখ্য, যা ১৯৩২ সালে চৈত্র মাসে বাসন্তী পুজোর সময় ‘বসেন্তেশ্বরী’ নামে সম্প্রচার করা হয়। সেই আদি লেখাটিকে বিভিন্ন ভাবে পরিমার্জন ও বাংলায় অনুবাদ করে পন্ডিত অশোক কুমার শাস্ত্রীর সহায়তায় রচিত হল বাংলা ও সংস্কৃত ভাষায় বেতার লিপি। পরের বছর রাইচাঁদ বড়ালের সংগীত পরিচালনায় দুর্গাষষ্ঠীর দিন সম্প্রচারিত হয় এই আদি অনুষ্ঠান। কিন্তু তখনও তা মহিষাসুরমর্দিনী হয়ে ওঠেনি। ‘শারদবন্দনা’, ‘মহিষাসুরবধ’, ‘প্রভাতী অনুষ্ঠান’ এসব নামে প্রচারিত হত। চন্ডীপাঠ করতেন বাণীকুমার।

আরও পড়ুন:  Mahalaya 2023 : মহালয়ায় হবে চক্ষুদান! রাবণের কুলদেবীর শারদীয়ায় অকালবোধন

এরপর বিভিন্ন সময়ে হতে থাকলো লেখনীর পরিমার্জন। একসময় শ্লোক পাঠ করার দায়িত্ব পেলেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। সংগীত পরিচালনার দায়িত্ব পঙ্কজ মল্লিকের। ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত মূল লিপিতে নানান পরিবর্তন করা হল। যুক্ত হল নতুন গান, নতুন শ্লোক, স্তব প্রভৃতির। এলো মাহেন্দ্রক্ষণ। ১৯৩৭ সাল। সম্পূর্ণ বেতারলিপি প্রচারিত হল ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ নামে।

আরও পড়ুন:  Mahalaya 2023 : মহালয়া অমাবস্যার তিথি ও তর্পণের সময় কি? জেনে নিন

সেই শুরু। এরপর থেকে প্রতি বছর সেই অনুষ্ঠান মহালয়ার ভোরে সম্প্রচারিত হতে থাকলো। সমস্ত শিল্পীরা মহালয়ার ভোরে সরাসরি স্টুডিতে এসে সেখান থেকে সম্প্রচার করতেন এই অনুষ্ঠান। এই রীতি বজায় ছিল ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত। সেই বছরেই মূল অনুষ্ঠানটি রেকর্ড করা হয়। তারপর থেকে এখন প্রতি বছর মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রর আবেগমথিত উদাত্ত কন্ঠে বেজে ওঠে সেই রেকর্ড-
“আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোকমঞ্জির,
ধরণীর বহিরাকাশে অন্তরিত মেঘমালা;
প্রকৃতির অন্তরাকাশে জাগরিত জ্যোতির্ময়ী জগন্মাতার আগামনবার্তা।
আনন্দময়ী মহামায়ার পদধ্বনি অসীম ছন্দে বেজে ওঠে….!”

হোম
জয়েন গ্রুপ
স্থানীয় খবর
জয়েন গ্রুপ
গুগল নিউজ