পুজোর ৪১৩তম বর্ষ। কুলদেবী সাবিত্রীর মন্দিরের ভিতরে চণ্ডীমণ্ডপ এবং পটে আঁকা ছবি সাবেকি চালে পূজিতা হয়ে আসছেন ঝাড়্গ্রাম রাজবাড়িতে। ঐতিহ্য, পরম্পরা ও নিয়ম সব কিছুতেই প্রাচীনত্ব ও স্বকীয়তা বহতামান।
সাধারণ ভাবে দুর্গাপুজোর বোধন হয় মহষষ্ঠীতে। কিন্তু ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ির কুলদেবী সাবিত্রীর নিত্যপুজো হয় দুর্গার ধ্যান-মন্ত্রে। তারপর মহাষষ্ঠীর পক্ষকাল আগে কৃষ্ণ নবমীতে হয় বোধন। আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের জীতাষ্টমী তিথিতে বেলগাছের তলায় অধিবাসের মাধ্যমে পুজোর সূচনা। কিন্তু কেন এই রূপ পুজো শুরুর রীতি!
জনশ্রুতি, কয়েকশো বছর আগে গড় ঝাড়গ্রামের জংলি মাল রাজাকে দ্বন্দ্বযুদ্ধে হারিয়ে রাজ্যপাট দখল করেন রাজপুতানার সর্বেশ্বর। তাঁর রাজ্যাভিষেকের দিন, ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের দ্বাদশী তিথিতে ইন্দ্রাভিষেক অনুষ্ঠান করা হয়। আরও জনশ্রতি, পরিবারের সমৃদ্ধি ও প্রজাদের মঙ্গল কামনায় জীমূতবাহনের পুজো হয়। শক্তিলাভের কামনায় জীতাষ্টমীর পর দিন কৃষ্ণপক্ষের নবমী তিথিতে অস্ত্রপূজার মাধ্যমে দুর্গাপুজো শুরু হয়।
পুজোর রীতি অনুযায়ী, ষষ্ঠীর দিন রাতে বেলগাছের নীচে মঙ্গলঘট স্থাপন করা হয়। সপ্তমীর দিন সকালে শোভাযাত্রা করে রাজবাড়ি থেকে খড়গ, রাজলক্ষ্মী, শালগ্রাম শিলা ও ঘট মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। দশমীর দিন ‘পাটাবিঁধা’ সম্পন্ন করে পুজো শেষ হয়। মাঝে দিনগুলি পুজোর রীতি মেনে মাতৃ আরাধনা চলে।