সামনেই পুজো। শুরু হয়ে গিয়েছে প্যান্ডেল বাধা। কিন্তু থিমের রোশনাইয়ের মধ্যেও প্রাচীন বনেদি বাড়ির পুজোগুলির এক অন্য আক্রর্ষণ। তেমনই এক পুজো বাঁকুড়া জেলার পাত্রসায়ের থানার হদল নারায়নপুরের জমিদার বাড়ির পুজো। প্রায় আড়াইশো বছরের পুরনো। যার ইতিহাস জড়িত বিষ্ণুপুরের মল্ল রাজাদের সঙ্গেও।
১৭১২ সাল, বর্ধমান জেলার নীলপুর থেকে মুচিরাম ঘোষ রাজ্যের নানা প্রান্ত ঘুরে বাঁকুড়া জেলার পাত্রসায়র থানার হদল নারায়নপুরে বসতি করেন। সেখানে তার পরিচয় হয় রামপুরের জগন্নাথ চৌধুরী তথা মল্ল রাজাদের থেকে উপাধি প্রাপ্ত গণিত আচার্য শুভঙ্কর রায়। তাঁরই সুবাদে বিষ্ণুপুরের তৎকালীন মল্ল রাজা গোপাল দেব সিংহ ঠাকুরের কাছে পাত্রসায়েরের পারুলিয়া পরগনার জমিদারি ও ‘মণ্ডল’ উপাধি পান মুচিরাম। এর কয়েক পুরুষ পর থেকে মণ্ডল বাড়িতে শুরু হয় দুর্গা পুজো।
এরপর রয়েছে কাহিনী। মণ্ডল পরিবারের সপ্তম পুরুষ, জমিদার বেচারাম মণ্ডল নদীপথে বাণিজ্য করে ফেরার পথে শ্রীরামপুরে কাছে ডাকাতদের কবলে পড়েন। দুই লাঠিয়াল দামু ও কামু ডাকাতদের সঙ্গে লড়াই করে বেচারাম মণ্ডলের প্রাণ রক্ষা করেন। বিশ্বাস জন্মায় দেবীর কৃপাতেই রক্ষা পেয়েছেন তিনি। আজও লাঠিয়াল দামু কামুর মূর্তি মণ্ডল বাড়ির প্রবেশ দ্বারের দু’দিকে রয়েছে। সেই বছর থেকেই মণ্ডল বাড়ির দুর্গাপুজো জৌলুষ বৃদ্ধি পায়। যা এখনও বিদ্যমান।