খড়গপুর শহরের বিভিন্ন জায়গায় জঞ্জালের স্তুপ। বিভিন্ন এলাকায় ভেসে আসে পচা গন্ধ। এমন অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে করে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ স্থানীয় কাউন্সিলর অথবা পুরসভার তরফে কোন পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি। তাই ৭২ ঘন্টা সময়সীমা দেওয়ার পর নিজের জঞ্জাল সরিয়ে রাস্তায় ফেলে আগুন লাগিয়ে অভিনব প্রতিবাদ করলেন সৌরভ নাথ নামে এক স্থানীয় ব্যক্তি। কিন্তু প্রতিবাদের ফল স্বরূপ প্রকাশ্য গালে পড়ল চড় থাপ্পড়, সৌজন্যে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ প্রতিবাদী সৌরভবাবুর।
দিন কয়েক আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরের প্রেমবাজার সোসাইটিতে জঞ্জাল পরিষ্কারের জন্য স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অপূর্ব ঘোষকে রীতিমতো ৭২ ঘন্টার সময়সীমা দিয়ে পোস্টার সাঁটেন স্থানীয় বাসিন্দা সৌরভ নাথ। তিনি দাবি করেছিলেন, ঐ সময়সীমার মধ্যে জঞ্জাল পরিষ্কার না হলে তিনি স্বয়ং তা তুলে রাস্তায় ফেলবেন ও জঞ্জাল পরিষ্কারে কাউন্সিলর অপূর্ব ঘোষের ব্যর্থতা শীর্ষক পোস্টার ছড়াবেন। সেই সময়সীমা অতিক্রান্ত হতেই বুধবার নিজেই জঞ্জাল পরিষ্কার করে ভ্যানে তুলে এনে প্রেমবাজারের রাস্তায় ফেলে আগুন ধরিয়ে দেন। সেই সঙ্গে ‘অপূর্ব ঘোষ মুর্দাবাদ’, ‘জঞ্জাল পরিষ্কারে কাউন্সিলর অপূর্ব ঘোষ ব্যর্থ’ স্লোগান দিয়ে পোস্টার ছড়াতে থাকেন। ভ্যানে একাধিক পোস্টারে লেখা ছিল ‘জঞ্জাল পরিষ্কারে অপূর্ব ঘোষের ব্যর্থতা’।
কিন্তু প্রতিবাদী সৌরভ নাথের অভিযোগ, এরপরেই তৃণমূল কাউন্সিলরের জনাকয় অনুগামী এসে তাঁর উপরে চড়াও হয়। কেন তিনি রাস্তায় জঞ্জাল জ্বালাচ্ছেন সেই প্রশ্ন তুলে বচসার মাঝে তাঁকে চড় থাপ্পড় মারা হয় বলেও অভিযোগ। প্রতিবাদী সৌরভ বাবুর বক্তব্য, নিজের প্রতিবাদ করার সাংবিধানিক অধিকারের কথা উল্লেখ করে সমাজমাধ্যমে তিনি জেলাশাসক, ডিএসপি, এসডিপিও কে প্রতিবাদের বিষয়টি জানিয়ে ছিলেন আগেই। তাঁর আরও অভিযোগ, “কাউন্সিলর অপূর্ব ঘোষের গুন্ডা বিশ্বজিৎ আমায় প্রথম আক্রমণ করেছে, সঙ্গে ছিল লাল্টু।”
যদিও অন্যদিকে ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অপূর্ব ঘোষ মারধরের ঘটনা অস্বীকার করেছেন। এমনকি তৃণমূলের তরফে বিষয়টি অস্বীকার করে বিজেপির চক্রান্ত বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। বিজেপির তরফে সৌরভ নাথের একক উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বিজেপির তরফে তাঁকে আক্রমণকারী দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যদিকে প্রতিবাদী সৌরভ নাথকে আটক করেছে পুলিশ।