শীতের মরশুমে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ এখন মেদিনীপুরের ক্ষীরাই! ফুল চাষীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ক্ষীরাই স্টেশন থেকে প্রায় দু কিলোমিটার দূরের মাঠগুলি এখন ফুলে ফুলে রঙিন। কংসাবতীর নদীর একটি শাখার তীর জুড়ে মাঠের পর মাঠ শুধুই ফুলের অপরূপ শোভা। ফুটে রয়েছে গাঁদা, অ্যাস্টর, চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া, গোলাপ প্রভৃতি। চোখ জুড়িয়ে যাওয়া এই সৌন্দর্যের টানে ভিড় জমাচ্ছেন দূরদূরান্তের পর্যটকেরা।
ফুলচাষ এই এলাকার চাষিদের অন্যতম জীবিকা৷ এখানকার ফুলের চাহিদা দূরদূরান্ত পর্যন্ত৷ যদিও কয়েক বছর আগে অব্দি ভিড় বিশেষ চোখে পড়েনি। এখন সমাজমাধ্যমের কল্যাণে ফুলের শোভা অনেকেই শীতের মরশুমে এখানে আকর্ষণ করছে। চলছে পিকনিকও ক্ষীরাই স্টেশনে নেমে দু’কিমি পথ এলেই ফুলের মাঠ। সেখানে যাওয়ার জন্য রয়েছে টোটো, গাড়ি প্রভৃতি। জনপ্রতি ভাড়া ২০ টাকা। এই ফুলের চাষকে কেন্দ্র করে বিগত এক বছরে এখানে গড়ে উঠেছে পর্যটনের অর্থনীতি। হাজার হাজার পর্যটক আসছেন, ফুলের বাগান ঘুরে দেখছেন, ছবি তুলছেন, রিল বানাচ্ছেন। পর্যটকদের যাতায়াতের জন্য গাড়ি টোটোর পাশাপাশি বসেছে বহু দোকান। অনেকেই সেখানে ফুল, ফুলের চারা, ফুলের বোকে কিনছেন। পর্যটকদের কল্যাণে সেখানকার বিভিন্ন হোটেল, ফাস্টফুডের দোকান, রেস্টুরেন্টেও ব্যবসা চলছে জমিয়ে। বসছে বিভিন্ন খাবারের স্টলও।
কিন্তু এই অতিরিক্ত পর্যটক সমাগমই কোথাও গিয়ে তৈরি করছে সমস্যা। চাষিদের অভিযোগ, এক শ্রেণির পর্যটক ফুল চাষের জমিতে নেমে অনেক সময়েই গাছের ও ফুলের ক্ষতি করছেন৷ জমি মশারি, জাল ইত্যাদি দিয়ে ঘেরা থাকলেও অনেকে তা টপকে নেমে পড়ছেন মাঠে। নিষেধ করা হলেও শুনছেন না। এমনকি পুলিশ প্রশাসনের তরফেও এই ধরণের অভব্য পর্যটকদের বাগে আনতে বিশেষ কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠছে। ফুল চাষের বিনিয়োগ ও পরিশ্রম অতি উৎসাহীদের দাপটে সংকটে পড়ছে। যা মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে এলাকার ফুল চাষিদের।