২০২৩ সালের সমাপ্তি আগত! শুরু হতে চলেছে নতুন বছর ২০২৪। শেষ হতে চলা বছরে ঘটেছে একাধিক এমন কিছু ঘটনা যেগুলি দেশ ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষিতে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। বছর শেষের আগে স্মৃতিচারণ করা যাক তেমনই এক ঘটনার। ২০২৩ সালেই ভারতের মহাকাশ গবেষণার মুকুটে যুক্ত হয়েছে নতুন পালক, সৌজন্যে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন তথা ইসরো। অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে গত ২৩ আগস্ট, ২০২৩ বুধবার চাঁদের দেশে ভারত ইতিহাস গড়ে! চাঁদের অজেয় ‘দক্ষিণ মেরু’র মাটি স্পর্শ করে চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম। আমেরিকা, রাশিয়া, চিনের পর চতুর্থ দেশ হিসাবে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর চন্দ্রযান এবং বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে চাঁদের দুর্গম ‘দক্ষিণ মেরু’ জয় করে ভারত।
গত ১৪ জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২টো ৩৫ মিনিটে এলভিএম-৩ রকেটের সাহায্যে পৃথিবীর মাটি ছাড়ে চন্দ্রযান-৩৷ এর আগে ২০১৯ সালে ইসরো-র চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ চাঁদের মাটিতে অবতরণ করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়। তারপরে এই নতুন অভিযান চলে। চন্দ্রযান ৩ এ থাকা ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদে অবতরণ করতে চন্দ্রযান-২ এর অরবিটারের সাহায্য নেয়।
২৩ আগস্ট, ২০২৩ ভারতীয় সময় বিকাল ৬ টা ৪ মিনিটে চাঁদের মাটি স্পর্শ করে চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম। বিকেল ৫টা ২০ মিনিট থেকে বিক্রমের অবতরণের সরাসরি সম্প্রচার শুরু করে ইসরো। ৫টা ৪৫ মিনিটে চূড়ান্ত অবতরণ প্রক্রিয়া শুরু করেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। চূড়ান্ত পর্যায়ের এই অবতরণ প্রক্রিয়ায় ১৯ মিনিট সময় লাগে। প্রথমে রাফ ব্রেকিং পর্যায়ে ৩০ কিলোমিটার থেকে বিক্রমের উচ্চতা কমিয়ে ৭ কিলোমিটারে আনা হয়। বিক্রমের অবতরণের গতি কমিয়ে ১,১৫০ মিটার প্রতি সেকেন্ড করা হয়। এরপর শেষ পর্যায়ে চাঁদের মাটিতে সফট ল্যান্ডিং করে বিক্রম। ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেখান থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দিয়ে বিক্রমের অবতরণ প্রত্যক্ষ করেন।
এরপর ধুলোর ঝড় থিতিয়ে যেতে ‘বিক্রম’ থেকে চাঁদের মাটিতে বের হয়ে আসে রোভার ‘প্রজ্ঞান’। ১ চন্দ্রদিবস তথা পৃথিবীর হিসাবে প্রায় ১৪ দিন সময় সে চাঁদের মাটিতে ঘুরে গবেষণার কাজ চালায়। তারপর পৃথিবী থেকে ইসরোর বিজ্ঞানীদের সংকেতে সেখানেই ঘুমিয়ে যায়। সফল হয় দেশের অন্যতম মহাকাশ গবেষণার পদক্ষেপ। মহাকাশ গবেষণা ক্ষেত্রে পৃথিবীর প্রথম চার দেশের তালিকায় স্থান করে নেয় ভারত।