দেশের স্বাধীনতা দিবস ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট। কিন্তু দেশ থেকে ব্রিটিশ বিদায় নেওয়ার অনেক আগেই তৈরি হয়েছিল এক অন্তর্বর্তীকালীন স্বাধীন ভারত সরকার। সিঙ্গাপুর থেকে দেশের পূর্ণ স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।
সময়টা ২১ অক্টোবর, ১৯৪৩ সাল। সূচনা হয়েছিল ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অনন্য অধ্যায়ের। সিঙ্গাপুরের ক্যাথে সিনেমা হলে ঘোষিত হয়েছিল অন্তর্বর্তীকালীন স্বাধীন ভারত সরকার। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু দায়িত্ব নেন সরকারের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপ্রধান ও সৈন্যবাহিনীর সর্বাধিনায়ক রূপে। তিনি যুদ্ধ ঘোষণা করেন ব্রিটেনের বিরুদ্ধে। সেই হিসেবে দেখতে গেলে প্রথম স্বাধীন ভারতীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী নেতাজি। পররাষ্ট্র ও যুদ্ধ বিষয়ক দপ্তরের দায়িত্ব নিয়ে ২১ জন সদস্যের পূর্ণ মন্ত্রিসভার ঘোষণা করেন তিনি। অর্থমন্ত্রী মেজর জেনারেল এসি চ্যাটার্জি, নারীবিষয়ক মন্ত্রী ক্যাপ্টেন লক্ষ্মী স্বামীনাথন, প্রচার দপ্তরে এস এ আইয়ার ও আইন বিভাগে এনএন সরকার।
৫ জুলাই সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ বাহিনীর সৈন্যদের সমাবেশে নেতাজি বলেছিলেন, “বর্তমানে আমি তোমাদের অন্য কিছুই দিতে পারি না— দিতে পারি শুধু ক্ষুধা, তৃষ্ণা, কৃচ্ছ্রতা, ক্লেশপূর্ণ অভিযান অথবা হয়তো মৃত্যু। তবু যদি জীবনে–মরণে তোমরা আমায় অনুসরণ কর... আমি তোমাদের জয় ও মুক্তির পথে নিয়ে যাব।” একের পর এক রণাঙ্গনে বীরত্ব দেখাতে থাকল স্বাধীন সরকার পরিচালিত আজাদ হিন্দ বাহিনী। তারপর হিরোসিমা ও নাগাসাকিতে পরমাণু বোমা নিক্ষেপ, আমেরিকার কাছে জাপানের পরাজয়। ধোঁয়াশাবৃত নেতাজির মৃত্যু-রহস্য। জয় হয়তো তখনই আসেনি। কিন্তু পথ দেখিয়েছিলেন সেই ‘অন্তর্বর্তীকালীন স্বাধীন ভারত সরকার’-এর প্রধানমন্ত্রী নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।