কলকাতা হাইকোর্ট বুধবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে ভর্ৎসনা করে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য ন্যূনতম ৮২ হাজার কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখার নির্দেশ দিয়েছে। বিরোধীদের আশঙ্কা, হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তাই মামলা হলে নিজেদের বক্তব্য সুপ্রিম কোর্টে পেশ করার জন্য বিজেপির তরফে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আগাম ক্যাভিয়েট দাখিল করলেন শীর্ষ আদালতে। এর ফলে রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট মামলাকারীদের বক্তব্য শোনার পাশাপাশি বিরোধীদের বক্তব্যও শুনবে।
আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের কলকাতা হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্য এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আর্জি খারিজ করে শীর্ষ আদালত কলকাতা হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখে সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেই নির্বাচনের আদেশ দিয়েছে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পরে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ২২টি জেলার জন্য মোট ২২ কোম্পানি অর্থাৎ ২০০০ আধা সেনা চেয়ে পাঠায় কেন্দ্রের কাছে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশ পালন করা হয়নি, এই অভিযোগে কমিশনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং কংগ্রেস নেতা আবু হাসেম খান চৌধুরি ওরফে ডালু। বুধবার সেই মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে।
মামলায় বিজেপি আদালতে জানায়, ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যে ৮২ হাজার কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছিল। এরপরেই প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম জানিয়েছেন, এই বারের নির্বাচনে গতবারের সমসংখ্যক অথবা তার বেশি বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। কেন্দ্রের কাছে বাহিনীর জন্য আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে আবেদন করতে হবে বলেও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে কমিশনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, “বলতে বাধ্য হচ্ছি, এত কিছুর পরে কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ থাকছে।” এখানেই শেষ হয়। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে তীব্র ভর্ৎসনা করে প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘কমিশনার যদি না পারেন তা হলে রাজ্যপালের কাছে যান। তিনি অন্য কাউকে আনবেন। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদ। এগুলো আশা করা যায় না।”