Netaji Birthday : নেতাজি ও ওয়ান্ডারার! বিখ্যাত এক গাড়ির গল্প

1609970599 5ff633a7e69c2 car

জার্মান মেড গাড়ি। পোশাকি নাম ওয়ান্ডারার ডব্লু ২৪। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছে গাড়িটি। ব্রিটিশ পুলিশ ও গোয়েন্দাদের চোখে ধুলো দিয়ে ১৯৪১ সালের ১৬ জানুয়ারি রাত দেড়টা নাগাদ এই গাড়িতে চড়েই এলগিন রোডের বাড়ি থেকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।

১৯৪০ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রেসিডেন্সি জেল থেকে ছাড়া পেয়ে এলগিন রোডের বাড়িতে যান সুভাষচন্দ্র। সেখানে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে নজরবন্দি করে রাখে। সেই সময় বাড়ি থেকে পালানোর জন্য ভাইপো, ডাক্তারি পাঠরত শিশিরকুমার বসুর সঙ্গে পরামর্শ করেন নেতাজি। বাড়িতে প্রথমে নিজেকে অন্তরীণ করেন তিনি। নেন মৌনব্রত। এমনকি মায়ের সঙ্গেও দেখা করতেন না। চিঠির মাধ্যমে শিশিরবাবুদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতেন। ব্রিটিশ সরকারের ধারণা হয় সুভাষচন্দ্র সন্ন্যাস নিতে চলেছেন। অন্যদিকে পরিকল্পনা তৈরি করতে থাকেন নেতাজি। ভাইপো শিশিরকে ওয়ান্ডারার গাড়িটিকে চালিয়ে ড্রাইভিং ও চাকা পাল্টানো অভ্যাস করতে বলেন। একবার একা চালিয়ে বর্ধমান পর্যন্ত ঘুরে আসতেও বলেন।

শিশিরবাবুর নামে ঐ ওয়ান্ডারার গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন হয় ১৯৩৭ সালে। তিনি নিজেই গাড়ি চালাতেন। ১৯৪১ সালের ১৬ জানুয়ারি কাকা সুভাষচন্দ্রের নির্দেশ মতো তিনি চার দরজার গাড়িটি নিয়ে বাড়ির পিছনের সিঁড়ির মুখে দাঁড়ান। দীর্ঘদিন বাড়ির বাইরে না আসা নেতাজির চেহারায় তখন অনেক পরিবর্তন। মহম্মদ জিয়াউদ্দিনের ছদ্মবেশে রাত ০১:৩০ নাগাদ গাড়িতে ওঠেন সুভাষচন্দ্র। গাড়ি রওনা হয়। প্রথমে অ্যালেনবি রোড ঘুরে আবার আবার উত্তরে গিয়ে আজকের শরৎ বসু রোড হয়ে শিয়ালদহ, হ্যারিসন রোড (এখনকার মহাত্মা গাঁধী রোড) হয়ে হাওড়া হয়ে গোমো পৌঁছন তাঁরা। সুভাষচন্দ্রকে গোমো স্টেশনের কিছুটা আগে নামিয়ে দিয়ে শিশিরবাবু কলকাতায় ফিরে আসেন। গোমো স্টেশন থেকে পেশোয়ারের উদ্দেশ্যে ট্রেন ধরেন বিমা সংস্থার এজেন্ট মহম্মদ জিয়াউদ্দিন ওরফে ফেরার সুভাষচন্দ্র বসু। শুরু হয় দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অনন্য অধ্যায়। ১৯৫৭ সালে নেতাজি রিসার্চ ব্যুরো গড়ে তোলার পরে নেতাজি সংগ্রহশালায় শিশিরবাবু প্রদর্শনের জন্য দিয়ে দেন ঐ অবিস্মরণীয় ওয়ান্ডারার গাড়িটি।

 

হোম
জয়েন গ্রুপ
স্থানীয় খবর
জয়েন গ্রুপ
গুগল নিউজ