২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের পর নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) দেশের প্রধানমন্ত্রী (PM) হন। ওই সময় থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত তিনি দেশবাসীর জন্য এমন কিছু প্রকল্প (PM Scheme) নিয়ে এসেছেন যে এতে অনেকের জীবন বদলে গেছে। দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও তার আমলে প্রচুর পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। সম্প্রতি বিশ্বকর্মা প্রকল্পেও রেখেছেন মোটা টাকার বাজেট। তবে চলুন একের পর এক প্রকল্পগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
১. প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি যোজনা – ভারত যেহেতু একটি কৃষি ভিত্তিক দেশ। তাই প্রথমেই শুরু করা যাক কৃষি দিয়ে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে একজন ভারতীয় কৃষক চাষের কাজের জন্য বছরে ৬ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন।
২. বিশ্বকর্মা প্রকল্প – কৃষির সঙ্গে সঙ্গে বর্তমান ভারত শিল্প ক্ষেত্রেও এগিয়ে যাচ্ছে। আরে শিল্প কারখানার কারিগরদের জন্যই মোদি সরকার নিয়ে এসেছেন বিশ্বকর্মা প্রকল্প। এই প্রকল্পের জন্য ১৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করে হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের কারিগররা কোনো রকম খরচ ছাড়াই কমন সার্ভিস সেন্টারে পিএম বিশ্বকর্মা পোর্টালে যুক্ত হতে পারবেন। কারিগরদের বেসিক এবং অ্যাডভান্সড প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এবং প্রশিক্ষণ চলাকালীন ৫০০ টাকা করে দেওয়া হবে আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনার জন্য। ১৫০০০ টাকা ইনসেন্টিভস দেওয়া হবে। প্রয়োজনের কারিগররা ৩ লক্ষ টাকা সুদ নিতে পারবেন ৫ শতাংশ সুদের বিনিময়ে
৩. প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা – প্রথম পর্যায়ে অর্থাৎ ২০১৪ সালে প্রকল্পটি চালু করা হয় এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্ট তৈরী করে দেওয়া হয়েছে। এবং একটি Rupay card দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় থাকা ব্যক্তিরা সরাসরি সরাসরি ব্যাংক থেকে টাকা পাঠাতে পারবেন।
৪. পিএম স্বনিধি যোজনা – ২০১৯ সালের কোভিডের ফলে রাস্তায় খুচরা বিক্রেতাদের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চরম সমস্যার সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় মোদী সরকার তাদেরকে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ঋণ প্রদান করেন। যার ফলে উপকৃত রাস্তার বিক্রেতারা।
৫. প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা – এই প্রকল্পে সুবিধাভোগীদের কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হয়। এবং ঋণ শোধ করার জন্য নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ থাকে। সুদের হারও থাকে নিম্ন যার ফলে উপকৃত অনেক সাধারণ মানুষ। তবে প্রকল্পের আরেকটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এই ঋণ এর জন্য কোন গ্যারান্টার লাগে না।
৬.*প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা* কোভিডের সময় ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি খাদ্য সংকটে পড়েছিল কোটি কোটি মানুষ। এই সব মানুষদের সাহায্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী চালু করেছিলেন এই প্রকল্প। প্রায় ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য প্রদান করা হয়।
৭.*প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বীমা যোজনা* ভারতবাসীর প্রতিটি মানুষের জীবনকে গুরুত্ব দিয়ে মোদী সরকার এই প্রকল্পটি চালু করেছিলেন। একজন ভারতীয় বছরে মাত্র ৩৩০ টাকা প্রেমিয়ামে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জীবন বীমা পান। এবং দুর্ঘটনার জন্য বার্ষিক ১২ টাকার প্রিমিয়ামে ২ লক্ষ টাকার বীমা পেয়ে থাকেন।
৮. অটল পেনশন যোজনা – প্রকল্পটি ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী দের জন্য চালু করা হয়েছিল। ৬০ বছর পর একজন মানুষের কর্ম ক্ষমতা কমে আসে, এই কথাটি মাথায় রেখেই এই প্রকল্পের মাধ্যমে সুবিধাভোগীরা ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ার পর প্রতিমাসে ১০০০ হাজার টাকা থেকে ৫০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত পেনশন পেয়ে থাকেন। প্রাক্তন প্রধান মন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর নাম অনুসারেই এই নাম দেওয়া হয়।
৯. উজ্জ্বলা যোজনা – ২০১৬ সালে ১ লা মে গ্রামাঞ্চলের মহিলাদের জন্য এই প্রকল্প চালু করা হয়। দরিদ্র মহিলারা এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে রান্নার গ্যাসের সংযোগ পেয়েছেন। আবার প্রতিমাসে গ্যাস ভর্তি করার জন্য ২০০ টাকা করে ভাতাও পেয়ে থাকেন। বর্তমানে ৮ কোটিরও বেশি মহিলা এর আওতায় রয়েছেন।
১০.আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প – ২০১৮ সালে চালু হওয়া প্রকল্পটির মাধ্যমে গরিব মানুষ অনেকখানি উপকৃত চিকিৎসার ক্ষেত্রে। এই প্রকল্পের অধীনে একজন ভারতীয় গুরুতর রোগে আক্রান্ত হলে বার্ষিক ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্য বীমা পাবেন। বর্তমানে এই প্রকল্পের অধীনে ৫০ কোটি ভারতীয় রয়েছেন।