জন গন তন্ত্র
কলমে- অভিজিৎ বেরা
সামনেই নির্বাচন, তাই পাড়ার হাঁদু পাঁচু খাঁদুরা সব ব্যস্ত হয়ে পড়েছে পার্টির প্রচারে। ছোট বেলায় যে জগা কোনদিন স্কুলের স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা নিয়ে ভারত মাতা কী জয় বলে প্রভাত ফেরিও করেনি। আমার সহপাঠী রতন খুড়ার বড় ছেলে জগা আজ একটা তেরঙা পতাকা নিয়ে প্রায় ৫ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে তার নেতাদের নামে জয়ধ্বনি দিতে দিতে পার্টির প্রচার করছে দেখলাম। সত্যিই ভাই ভোট পরব এসে গেছে।
হাঁদু বা খাঁদু এমনিতে হলায় গলায় বন্ধু। কিন্তু এখন রাম ভক্ত হাঁদুর সাথে বাম ভক্ত খাঁদুর সাপে নেউলের সম্পর্ক। ওদিকে জগার সাথে বনিবনা না হওয়ায় পচা এবার নিজেই র্নিদলে নাম লিখিয়েছে।
কাল শুনলাম নগেন ওর দাদা খগেনের গোয়াল ঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। খগেনের দোষ ও এবছর গত পাঁচবারের পঞ্চায়েত প্রধান নিজের ভাই এর বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়িয়েছে। হায়রে গনতন্ত্র তুমি ভায়ে ভায়ে বিবাদ ধরিয়ে দিলে!
তবে এতো বিবাদ, শত্রুতার মাঝেও এদের সবার একটাই লক্ষ্য “জনগনের উন্নয়ন”। জনগনের উন্নয়ন করতে এরা এতোটাই উদগ্রীব যে নিজেদের মধ্যে লড়াই- বিবাদ-খুনোখুন করতেও এদের দ্বিধাবোধ নেই। আর এই উন্নয়নের পিছনে চাপা পড়ে যায় যাদের জন্য এই ভোট পরব সেই আম আদমি, সেই জনতা জনার্দনের কথা।
বেহায়া দেশে গনতন্ত্র শুধুমাত্র প্রহসন এখন। যেখানে ভোটের আগেই নমিনেশন দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিবাদ, খুনোখুনি সেখানে দাঁড়িয়ে আম জনতার ভোট প্রদান বিলাসিতা ছাড়া আর কী কিছু হতে পারে?
একবার ভেবে দেখুন কাদের জন্য ভোট, কাদের জন্য উন্নয়ন, কাদের জন্য এই গনতন্ত্র!
স্বাধীন দেশে স্বাদহীন ভাবে বেঁচে থাকার নাম স্বধীনতা হতে পারে না। নেতাদের জন্য উন্নয়নের জোয়ার এনে সমাজের উন্নয়ন হতে পারে না।