বুধবার ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘মাওবাদী নেই’ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে গুজব ছড়ানোর বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে জেলায় জল সংরক্ষণ, পোল্ট্রি প্রকল্প, সুস্বাস্থ্য প্রকল্প, মেডিকেল কলেজ নিয়েও খোঁজ নেন তিনি। সেই সঙ্গে দিয়েছেন একাধিক প্রশাসনিক নির্দেশও।
এইদিন মেদিনীপুরে দলীয় কর্মী সমাবেশের পরেই ঝাড়গ্রাম এসে প্রশাসনিক বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সভার শুরুতেই ঝাড়গ্রামের আদিবাসী সাহিত্য, শিল্পকলা, শিক্ষা, খেলাধুলো প্রভৃতি একাধিক বিষয়ে কৃতিদের সম্বর্ধনা জানান তিনি। সাম্প্রতিক সময়ে মাওবাদী নামাঙ্কিত একাধিক পোস্টারের দেখা মিলছে ঝাড়গ্রাম সহ জঙ্গলমহলে। ভুয়ো পোস্টার ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মোট ৮ জনকে। মাওবাদী প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, মাওবাদী নেই। তবে তাদের নামে হাতে লেখা পোস্টার সাঁটিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। তিনি পুলিশকর্তাদের জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘কোনও থানা থেকে কি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, সন্ধ্যা ৬টার পরে বাইরে বেরোবেন না? পুলিশ থেকে কি এটা প্রচার করা হয়েছে?” প্রত্যুত্তরে প্রশাসনিক ও পুলিশের কর্তারা অসম্মতি জানানোয় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “খুব গোপনে কেউ গুজব ছড়িয়েছে, মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করার জন্য।” কেউ আতঙ্ক ছড়াচ্ছে এই বিষয়ে সতর্ক করে নেটমাধ্যমেও নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। হাতে পোস্টার লিখে পোস্টারের ছবি তুলে বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানিয়ে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের ঝাড়খন্ড সীমানায় নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে প্রতিবেশী রাজ্যের সঙ্গে কথা বলতে বলেন তিনি। এছাড়া পুলিশকে আদিবাসী জনজাতির মহিলাদের নিয়ে ‘উইনার্স টিম’ তৈরি করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রশাসনিক সভায় জেলার মেডিকেল কলেজ তৈরির কাজের অগ্রগতি নিয়ে খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী। গরমে দলের সমস্যা দূর করার জন্য আরও জলাশয় খনন ও জলাধার তৈরির বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। খোঁজ নেন সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলার বিষয়েও। জেলার আদিবাসী ও প্রান্তিক জনজাতির ছাত্রছাত্রীদের জন্য আশ্রম ভিত্তিক হোস্টেলে বিষয়ে খতিয়ে দেখার জন্যও প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।