‘বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে শুধুমাত্র কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলা সরছে!’ ‘সরছে না অন্যান্য নিয়োগ মামলা!’ সম্পূর্ণ ভিন্ন সুর মামলার অন্যতম আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের। সুপ্রিম কোর্টের আদেশ নিয়ে বিভ্রান্তি ছাড়ানোর অভিযোগ আনলেন তিনি।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে মামলা সরিয়ে দিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির আদেশ ঘিরে তোলপাড় রাজ্য। পক্ষ বিপক্ষ মত ঘিরে ঝড় উঠেছে সংবাদমাধ্যম ও সমাজমাধ্যমে। এই পরিস্থিতিতে “বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত সমস্ত মামলা সরিয়ে দেওয়ার” বিষয়টি সম্পূর্ণ নাকচ করলেন মামলার অন্যতম আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কুন্তল ঘোষের ইডি ও সিবিআই এর বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশের কাছে পাঠানো চিঠি সংক্রান্ত মামলায় প্রয়োজনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও কুন্তল ঘোষকে ইডি ও সিবিআই প্রশ্ন করতে পারবে বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলতে তদন্তকারীরা চাপ দিচ্ছেন”, এমন অভিযোগ এনে প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারের মাধ্যমে হেস্টিংস থানায় অভিযোগপত্র পাঠিয়েছিলেন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষ। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে অন্তর্বর্তিকালীন স্থগিতাদেশ দিয়ে জানিয়েছিল, কুন্তলের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় এখনই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে না সিবিআই। এরপর একই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কুন্তল ঘোষও।
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে একটি জনপ্রিয় বাংলা সংবাদমাধ্যমে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সাক্ষাৎকার দেন। গত সোমবার উল্লিখিত মামলার শুনানিতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এরপরেই কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে আগামী শুক্রবারের মধ্যে সাক্ষাৎকার নিয়ে হলফনামা তলব করে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারাধীন বিষয়ে বিচারক প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে পারেন না বলেও জানায় শীর্ষ আদালত।
শুক্রবার জানা যায়, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত মামলা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছন। যা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় রাজ্যে। ইতিমধ্যে মামলার অন্যতম আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের আদেশ নিয়ে বিভ্রান্তি ছাড়ানো হচ্ছে। শুধুমাত্র কুন্তলের চিঠি সংক্রান্ত বিচারাধীন মামলাটিই অন্য বিচারপতির এজলাসে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। তিনি নিজের আদেশে, ‘দিস কেস’ অর্থাৎ ‘এই মামলা’ বলে উল্লেখ করেছেন। এখন সুপ্রিম কোর্টের প্রকৃত আদেশ কি তা নিয়েও উঠে গেল প্রশ্ন। যদিও বিস্তারিত আদেশনামা এখনও মেলেনি।