ঐতিহ্যের কাছে হার মানল প্রাকৃতিক দুর্যোগ

অকাল বৃষ্টির কারণে, একদিন দেরিতে হলেও গোপীবল্লভপুরে হল মকর সংক্রান্তির ৪০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী বুলবুলি পাখির লড়াই। একেবারে অন্য স্বাদের ভিন্নধর্মী এই বুলবুলি লড়াইতে নিজের বুলবুলি পাখি নিয়ে অংশ নিলেন ২০০ জন প্রতিযোগী।গোপীবল্লভপুরের বাজার সাই এবং দক্ষিণ সাই এর এদিনের হাড্ডা হাড্ডি লড়াইতে মোট ১২ টি পাখিকে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়ে জয়লাভ করল বাজার সাইর সুজিত বেরার বুলবুলি পাখি। জানা গেছে, জঙ্গলমহল জুড়ে সাধারণত মোরগ লড়াইয়ের অধিক প্রচলন থাকলেও তা রক্তপাত যুক্ত।মোরগ লড়াইতে অংশগ্রহণকারী মোরগের প্রাণ হানির আশঙ্কা থাকে,তাই বৈষ্ণব ধর্মপ্রাণ শ্রী পাট গোপীবল্লভপুরবাসী প্রায় ৪০০ বছর আগে মকর সংক্রান্তির দিন বুলবুলি পাখির লড়াইয়ের প্রচলন শুরু করেন।এই লড়াইতে অংশগ্রহণকারী বুলবুলি পাখি পরাজিত হলেও কোন রকম রক্তপাত কিংবা পাখির প্রাণ হানির আশঙ্কা নেই। তাই বৈষ্ণব তীর্থ গোপীবল্লভপুরের মানুষের কাছে আজও এই বুলবুলি লড়াই সমানে চলে আসছে। প্রতি বছর মকর সংক্রান্তির দিন শ্রী পাট গোপীবল্লভপুরের উৎসাহী মানুষ সুবর্ণরেখা নদীতে মকর স্নান করে দুপুরবেলা প্রশিক্ষিত পাখিকে লড়াইয়ের ময়দানে নামান।উদ্যোক্তাদের পক্ষে রাধাগোবিন্দ জীউ মন্দির কমিটির সম্পাদক কল্যান বারিক জানান, প্রায় ১ মাস আগে থেকে পুষ্টিকর খাবার দিয়ে পাখিগুলোকে লড়াইর জন্য প্রশিক্ষিত করা হয়। তারপর মকর সংক্রান্তির দিন সকাল থেকে পাখিগুলোকে খাবার খেতে না দিয়ে দুপুরবেলা মন্দর চত্ত্বরে একটি টেবিলের উপর দুটি পাখিকে এনে সামনে খাবার দেখালে খাবার নেওয়ার জন্য লড়াইতে নেমে পড়ে।এই লড়াইতে যার পাখি ময়দান ছাড়ে তার পাখি পরাজিত হয়। পাশাপাশি যে পাখি সবথেকে বেশি পাখিকে পরাজিত করতে পারে সে হয় সমস্ত প্রতিযোগীর উইনার। স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিনের এই বুলবুলি লড়াই গোপীবল্লভপুর মন্দির চত্বরে মকর সংক্রান্তির দিন হলেও এবছর মকর সংক্রান্তির দিন ভোর থেকে অনবরত বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত দিনে বুলবুলি লড়াই হতে পারেনি। কিন্তু আবহাওয়া পরিষ্কার করতেই উৎসাহী মানুষজন মকর সংক্রান্তির পরের দিন শনিবার যথারিতি ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। এবিষয়ে লড়াই দেখতে আসা গোপীবল্লভপুর দু’নম্বর ব্লকের জুনশোলা গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ পাল বলেন, এ বছর মকর সংক্রান্তির দিন এই ঐতিহাসিক লড়াই হয়নি তাই মনটা একটু খারাপ ছিল । ভেবেছিলাম এ বছর হয়তো আর বুলবুলি লড়াই দেখতে পাবোনা ।কিন্তু আজকে দুর্যোগ কেটে যাওয়ার ফলে আবার লড়াই হবে খবর পাই তাই ছুটে এসেছি প্রতিবছরই আমি লড়াই দেখতে আসি এবারে করোনা পরিস্থিতির জন্য লোক সংখ্যা দেখছি অনেকটাই কম কিন্তু পাখি অনেকে আছে।

আরও পড়ুন:  Jhargram: ‘বিজেপি-র নেতা গ্রেপ্তার নয় কেন’, প্রশ্ন তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

হোম
জয়েন গ্রুপ
স্থানীয় খবর
জয়েন গ্রুপ
গুগল নিউজ