জঙ্গলমহল সফরে মেদিনীপুর এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েকমাস পরেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। তারই প্রাক্কালে মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর তাৎপর্যপূর্ণ। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর কলেজ ও কলেজিয়েট ময়দানে প্রশাসনিক সভা থেকে একাধিক বিষয়ে কেন্দ্রের মোদি সরকার ও রাজ্য বিজেপির উদ্দেশ্যে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ আবাস যোজনা থেকে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান, একাধিক বিষয়ে আনলেন অভিযোগ।
কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্যকে টাকা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাঁর বক্তব্য, “রাস্তা খারাপ, কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না, তাও ১১ হাজার ৫০০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করছি।” তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিচ্ছে না। বঞ্চনা করছে। আর মিথ্যে বলছে। বিজেপি নেতারা গিয়ে বলছে, ‘রাস্তায় টাকা দিও না, জলে টাকা দিও না, বাড়িতে টাকা দিও না, ১০০ দিনের কাজে টাকা দিও না। মানুষ উপকৃত হলে, আমরা কোন মুখে গিয়ে ভোট চাইব!’ আমি বলি, তোমাদের লজ্জা হওয়া উচিত। কারণ এগুলো মানুষের টাকা। জনগণের কর থেকে টাকা তুলে নিয়ে যায় দিল্লি। আগে রাজ্য কর সংগ্রহ করত। এখন করে না। কাপড় কিনতে গেলেও জিএসটি কাটে। সেই টাকা কেন্দ্র পায়। আমাদের রাজ্যের ভাগটা পর্যন্ত দেয় না।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, “আবাসে ঘর পেতে গেলে কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, যাঁর বাড়িতে স্কুটি আছে তাঁকে আবাস প্রকল্পে বাড়ি নয়। বা যাঁর বাড়িতে কেউ চাকরি করেন, তিনিও বাংলায় বাড়ি পাবেন না। তা হলে পাবেটা কে? তোমরা ঠিক করে দেবে?” মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার বলেছে আধার কার্ড লিঙ্ক না করালে টাকা পাওয়া যাবে না। কিন্তু লিঙ্কটা করাবে কোথায়? গ্রামের মানুষ অনলাইনে লিঙ্ক করাবে?’’ তিনি প্রশ্ন করেন, ‘‘কত গ্রামে ব্যাঙ্কই নেই। অনলাইনটা করবে কোথা থেকে? মাথা থেকে? মুণ্ডু থেকে? সেটা একবার দেখবেন না।’’
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের বাস্তবায়ন না হওয়ার জন্যও কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করেছেন মমতা। তাঁর দাবি, রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী একাধিকবার দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে দেখা করে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য দরবার করলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরু করেছি, কিন্তু কেন্দ্র সরকার এখনও ছাড়পত্র দেয়নি। আমাদের মন্ত্রীরা গিয়েও কথা বলে এসেছে। নিজেদের টাকা দিয়ে অনেকটা কাজ করেছি।”