প্রায় রোজই হাতির তাণ্ডবের ঘটনা ঘটে চলেছে ঝাড়গ্রাম জুড়ে। দিন দুয়েক আগেই পুকুরিয়া বিটের পিপড়ি গ্রামে ১২-১৩ টি হাতির দল ভেঙে দেয় মাটির বাড়ি। লুঠ করে রান্নাঘর। এবার গোপিবল্লভপুরে রেঞ্জের আমঝুড়ি বিটের সারিয়া গ্রামে শনিবার রাতে প্রায় ৭ ঘন্টা ব্যাপী তান্ডব চালালো পাঁচটি হাতির দল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রাম জেলায় মোট ৬০-৭০ টি হাতি বিভিন্ন এলাকায় দলে ভাগ হয়ে গ্রামে আক্রমণ চালাচ্ছে। জঙ্গল লাগোয়া জনপদ থেকে শুরু করে জেলা শহর এমনকি জঙ্গলের দূরবর্তী গ্রামেও হাতি ঢুকে আসলে। এক্ষেত্রে স্থানীয়দের বক্তব্য, হাতির আচরণ ও বিচরণগত ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে। আগে মূলত ধান পাকার মরশুমে হাতির আনাগোনা বেশি হত। কিন্তু ইদানিং প্রাক বর্ষাতেও জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে আসছে হাতি। সরাসরি হামলা চালাচ্ছে গৃহস্থের বাড়িতে। আবার শীতকালীন সব্জির সময়েও হানা দিচ্ছে হাতির দল। গ্রীষ্মকালে আম কাঁঠাল পাকার সময় ধ্বংস করছে বাগান। শালবনী, বিকাশভারতীর বিভিন্ন এলাকায় বাগান থাকায় সেখানে ঐ সময়ে হাতির দল ডেরাও বাঁধছে। বর্ষার চাষের সময় নষ্ট হচ্ছে বীজতলা। প্রবল ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ক্ষেতের ফসল। ফলে আতান্তরে পড়ছেন কৃষকেরা।
অন্যদিকে গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ লক্ষ্য করা গিয়েছে বন দফরতরের ভূমিকা নিয়ে। তাঁদের বক্তব্য, বন দফতর হাতি তাড়াতে সদর্থক পদক্ষেপ নিচ্ছে না। হুলাপার্টির সঙ্গে গ্রামবাসীদের সমন্বয়ের অভাব ও প্রকৃত প্রশিক্ষণ নিয়েও অভিযোগ করেছেন অনেকে। ক্ষোভ রয়েছে ক্ষতিপূরণ নিয়েও। অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রেই ক্ষতিপূরণ মিলছে না। পেলেও তা পর্যাপ্ত নয়। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় বিধায়িকা তথা বন প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন ঝাড়গ্রামবাসী। তাঁকে সদর্থক পদক্ষেপ নিতেও অনুরোধ জানাচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।