বাংলায় এগিয়ে কারা? রহস্য লুকিয়ে ১৬ আসনে

বাংলায় এগিয়ে কারা? রহস্য লুকিয়ে ১৬ আসনে

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় এগিয়ে থাকবে কারা, তা নির্ভর করতে পারে এই ১৬টি আসনে।

এক নজরে ১৬ টি আসন :
ঝাড়গ্রাম(১): ২০১৯ সালে এই লোকসভা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলো বিজেপি প্রার্থী কুনার হেমব্রম। এই নির্বাচনে পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে ঝাড়গ্রাম লোকসভার। এখানে ৩৫ শতাংশ এর মতো ভোট রয়েছে কুড়মি কমিউনিটির। এই কমিউনিটির ভোট এবার পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। কুড়মি কমিউনিটি থেকে প্রার্থী দিয়েছে ঝাড়গ্রাম লোকসভায়। এই কমিউনিটির ভোট নিজেদের দিকেই থাকে নাকি, অন্য কোন রাজনৈতিক দলের দিকে ঘুরে যায়; সেটার উপর নির্ভর করবে।

মেদিনীপুর(২): দিলীপ-হীন মেদিনীপুরে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী জুন মালিয়া। ২০১৯ সালে মানস ভুঁইয়ার মতো নেতাকে হারিয়ে জয়ী হয়েছিলো বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। দিলীপ ঘোষের ছেড়ে যাওয়া আসন ধরে রাখাই এখন সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ অগ্নিমিত্রার কাছে। জুন মালিয়া মেদিনীপুরের বিধায়ক হওয়ায় এলাকাকে নিজের তালুর মতো চেনেন। ফলে অগ্নিমিত্রার থেকে কাজটা অনেক সহজ হয়ে গেছে জুন মালিয়ার কাছে।

বাঁকুড়া(৩): বাঁকুড়া লোকসভা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে তৃণমূলের অরূপ চক্রবর্তী এবং বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকার। ২০১৯ তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে হারিয়ে জয়ী হয়েছিলো বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার। জয়ের ব্যবধান ছিল ১ লাখ ৭৫ হাজার। তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী কি পারবে এই বিপুল পার্থক্য উজিয়ে জয়ী হতে? সেটা অবশ্য সময় বলবে। তবে এবার যে এই আসনে বিজেপি প্রার্থীর জয় সহজ হবে না, সেটা বুঝতে পারছেন বিজেপি প্রার্থীও।

ঘাটাল(৪): বিজেপি ও তৃণমূলের অভিনেতা প্রার্থী হিরণ ও দেব। দেব ঘাটালের বিদায়ী সাংসদ। সাংসদ থাকার ফলে দেবের সাথে স্থানীয় নেতৃত্বের মত পার্থক্য দেখা দেয় বিভিন্ন বিষয়ে। প্রচারের ফাঁকে দেব বলেন, তৃণমূল-কে হারাতে পারে একমাত্র তৃণমূলই। ২০২১ সালে খড়গপুর থেকে বিজেপির হয়ে জয়লাভ করে হিরণ চট্টোপাধ্যায়। দুই অভিনেতার লড়াইয়ে সরগরম ঘাটাল। ঘাটালে এগিয়ে রয়েছেন দেব। তবে দেবকে ছাপিয়ে গিয়ে হিরণ জয় তুলতে পারবেন কিনা, তা সময় বলবে।

তমলুক(৫): ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রাজ্যের সব থেকে আলোচিত লোকসভা তমলুকে। এখানে বিজেপির প্রার্থী প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তৃণমূলের যুবনেতা দেবাংশু এবং সিপিএমের তরুণ আইনজীবী সায়ন ব্যানার্জি। তমলুক লোকসভা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর খাস তালুক। ফলে এখানে শাসক দলের লড়াই একই সঙ্গে বিজেপি, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন:  Todays Petrol Diesel Price 28/3/2024 : আপনার শহরের তেলের দাম কী চলছে তা জানুন

বর্ধমান দুর্গাপুর(৬): এই লোকসভা আসনে বিজেপির প্রার্থী হলেন দিলীপ ঘোষ। কিন্তু তাঁকে পিছু ছাড়েনি বিতর্ক। দিলীপ ঘোষ মানেই বিতর্ক। কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে নির্বাচন কমিশনের বিরাগভাজন হয়েছেন তিনি। এই আসনে তৃণমূলের প্রার্থী করেছে প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদকে। যদিও ২০১৯ সালে এখানে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। এই আসনে লড়াই পঞ্চাশ-পঞ্চাশ। তবে সাংগঠনিক নেতা দিলীপ ঘোষ কিছুটা হলেও এগিয়ে রয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

হুগলি(৭): এই আসনে তৃণমূলের প্রার্থী দিদি নম্বর ওয়ানের রচনা বন্দোপাধ্যায়। তিনি প্রার্থী হওয়ার পরেই তাঁর বেশকিছু মন্তব্য করে নিয়ে হাস্যরোল উঠেছে। রচনার বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি এখানের বিদায়ী সাংসদ এবং লড়াকু নেত্রী বলেই পরিচিত। রচনা এখনও অভিনেত্রী হলেও লকেট অভিনয় ছেড়ে পোড় খাওয়া রাজনীতিক ও দলের লড়াকু নেত্রী। এখন দেখার বিষয় তিনি নিজের আসন ধরে রাখতে পারে কিনা।

উত্তর কলকাতা(৮): তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক বার জিতেছেন এই আসনে। অন্যদিকে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মতপার্থক্যের কারণেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন তাপস রায়। আর সেই তৃণমূলের প্রাক্তন নেতাকেই উত্তর কলকাতায় বিজেপি প্রার্থী করেছে। যদিও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এগিয়ে রয়েছেন এই আসনে।

ব্যারাকপুর(৯): ২০১৯ সালে তৃণমূল অর্জুন সিং-কে প্রার্থী না করায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তৎকালিন তৃণমূল নেতা তথা ভাটপাড়ার বিধায়ক। যোগ দিয়েই বিজেপি থেকে প্রার্থী হয়ে, তৃনমূল প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদীকে হারিয়ে জয়ী হন। বিজেপির সাথে মনোমালিন্যের কারনে পুনরায় তৃণমূলে ফিরে যান তিনি। কিন্তু ২০২৪ সালেও অর্জুন-কে তৃণমূল প্রার্থী না করায়, তিনি আবার বিজেপিতে যোগ দিয়ে প্রার্থী হয়েছেন। এবার এই আসনে তৃণমূলের প্রার্থী পার্থ ভৌমিক। অর্জুনের বারংবার দলবদল জনমানসে প্রভাব ফেলতে পারে।

আরও পড়ুন:  Todays Petrol Diesel Price 3/4/2024 : আপনার শহরের তেলের দাম কী চলছে তা জানুন

বসিরহাট(১০): বিজেপি প্রার্থী তালিকায় চমক দিয়েছে। বসিরহাট লোকসভায় বিজেপির প্রার্থী সন্দেশখালির সাধারণ গৃহবধূ রেখা পাত্র। তিনি সন্দেশখালির প্রতিবাদী মুখ। ফলে সবার নজর রয়েছে রেখা পাত্রর দিকে। তৃণমূল প্রার্থী করেছে ২০০৯ সালের জয়ী সাংসদ নুরুল ইসলামকে। যদিও রেখা পাত্রের উপস্থিতিতে বিদায়ী সাংসদের জয় সহজ হবে না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

কৃষ্ণনগর(১১): বিজেপি প্রার্থী রাজমাতা অমৃতা রায়। তৃণমূল প্রার্থী একাধিক মামলায় জর্জরিত মহুয়া মিত্র। তার বিরুদ্ধে আর্থিক সুবিধা নিয়ে লোকসভায় প্রশ্ন করার অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগেই মহুয়ার সাংসদ পদও খারিজ হয়ে গিয়েছে। এবার দেখার বিষয়, মহুয়া মিত্র পুনরায় জয়ী হতে পারেন কিনা!

বহরমপুর(১২): এখানে মূলত লড়াই হবে তৃণমূলের সাথে কংগ্রেসের। এই আসনে স্বাভাবিক ভাবেই অধীর রঞ্জন চৌধুরী কংগ্রেসের প্রার্থী। তৃণমূল প্রার্থী প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান। লড়াই হলেও এগিয়ে রয়েছেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী।

মুর্শিদাবাদ(১৩): কংগ্রেস বামেদের ছেড়ে দিয়েছে এই আসন। ফলে এখানে সিপিএমের সাথে তৃণমূলের লড়াই হতে চলেছে। কংগ্রেস প্রার্থী না দেওয়ায় সুবিধা পেতে পারেন সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিম

বালুরঘাট(১৪): দুই প্রার্থীই হেভিওয়েট! বিদায়ী সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রার্থী রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র। ২০১৯ সালে এই আসনে তৃণমূলের অর্পিতা ঘোষকে হারিয়ে সাংসদ হয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার। এবার তার কাছে নিজের আসন ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ।

মালদা উত্তর(১৫): ত্রিমুখী লড়াইয়ে জমজমাট মালদা উত্তর। বিজেপির সাংসদ খগেন মুর্মু এবার বেশ খানিকটা ব্যাকফুটে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের দিকে তাকালে সহজেই অনুমেয় যে, লড়াই হতে চলেছে কংগ্রেস, তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে। এখন দেখার, শেষ হাসি হাসতে পারে যেকোন দল।

রায়গঞ্জ(১৬): ত্রিমুখী লড়াই! এই আসনে তৃণমূল কখনও জিততে পারেনি। তৃণমূল প্রার্থী করেছে বিজেপি থেকে তৃণমূলে নাম লেখানো কৃষ্ণ কল্যাণীকে। একটা সময় রায়গঞ্জ ছিলো প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির গড়। যদিও সেই কংগ্রেসী আধিপত্য আজ অনেকটাই অস্তমিত। বিজেপি তাদের বিদায়ী সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীকে এবারে দেয়নি প্রার্থী পদ। দেবশ্রীর পরিবর্তে প্রার্থী হয়েছেন কার্তিক পাল।

হোম
জয়েন গ্রুপ
স্থানীয় খবর
জয়েন গ্রুপ
গুগল নিউজ