অলাভজনক ট্রেন হওয়ায় বন্ধ রানী শিরোমণির নামাঙ্কিত হাওড়া – আদ্রা শিরোমণি ফাস্ট প্যাসেঞ্জার ট্রেন। রেল দফতরের সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়াবাসীর মধ্যে।
দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে প্রথম রাজনৈতিক বন্দিনী, রানী শিরোমণি। কর্নগড়-রানীর স্মৃতি আজ বহু ইতিহাস সচেতন ও সংস্কৃতি সম্পন্ন মানুষের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় রাজ্যের জনমানসে পরিচিতি পেয়েছে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদান্যতায় কর্নগড় পেয়েছে হেরিটেজ সম্মান। তারপরেই জঙ্গলমহলের মানুষকে বিস্মিত করে রেলের তরফে বন্ধ করে দেওয়া হল রানী শিরোমণির নামাঙ্কিত হাওড়া – আদ্রা শিরোমণি ফাস্ট প্যাসেঞ্জার ট্রেন। রেলের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, ট্রেন রুট অলাভজনক। যদিও বিপরীত তত্ত্ব উঠে এসেছে ট্রেনের নিয়মিত যাত্রী ও জঙ্গলমহলবাসীর বক্তব্যে। জঙ্গলমহলের জেলার মানুষদের বক্তব্য, ট্রেন বন্ধ করার সিদ্ধান্তটি পূর্ব পরিকল্পিত। এমনকি সম্প্রতি স্টেশনগুলোতে ট্রেনটির ঘোষনার সময় নাকি ‘শিরোমণি’ শব্দটি উল্লেখ করা হতো না। এছাড়া ট্রেনটিতে যাত্রীও হতো নিয়মিত। করোনা কালের সময় সরকারি নিয়মে সারা দেশে বন্ধ হয়েছিল রেল যোগাযোগ। সেই সময় থেকেই বন্ধ রয়েছে ট্রেনটি। এখন করোনা পরিস্থিতি ও রেল চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার পরেও চালু হয়নি ঐতিহ্যবাহী ট্রেনটি।
রুটের ও সময়ের কারনে মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার হাওড়া-কলকাতাগামী রেল যাত্রীদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনটি। দীর্ঘদিন কর্নগড়ের হেরিটেজকরণ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সংগঠন ‘ভালোবাসি কর্নগড়’-এর অন্যতম সংগঠক-সদস্য নিসর্গ নির্যাস মাহাতো রেল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অবিলম্বে রানি শিরোমণি নামাঙ্কিত ট্রেন চালু করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেছেন, “ট্রেন অবিলম্বে চালু করতে হবে এবং ঘোষণার সময় কখনও ‘শিরোমণি’ শব্দটি বাদ দেওয়া যাবে না। জেলার আবেগ নিয়ে খেলা যাবে না। নইলে আমরা স্টেশন অভিযান করব।”