ডায়মন্ড হারবারে লাইট হাউসের মাঠে বিজেপি-র সভা। সেখান থেকেই স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, “পুলিশের নাম মমতা পুলিশ। বেতন দেন ভাইপোর পিএ। এই সভার অনুমতি নিতে আদালতে যেতে হয়েছিল। কোর্ট বলল লাইটহাউস ময়দানে সভা করো। আমাদের প্যান্ডলে ভেঙে দেওয়া হল। কর্মীদের বললাম আপনারা উত্তেজিত হবেন না।” তার অভিযোগ, “আমাদের একের পর এক গাড়িকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। হটুগঞ্জে সামসুর চকে ২০০ বেশি গাড়ি, ২০ হাজার কর্মকর্তাকে আটকে দেওয়া হয়েছে।”
বিরোধী দলনেতা বলেন, “গোটা বাংলায় কীভাবে সিপিএমকে সরানো যায় তার পধ দেখিয়েছিলেন নদীর এপারে আপনারা, আর নদীর ওপারে আমরা। ২০০৯ সালে লোকসভায় বদল এসেছিল। ২০১১ সালে বিধানসভায় বদল এসেছিল। ২০১৪ ও ২০১৬ সাল পর্যন্ত এখানে ভোট হতো। ২০১৬ সালের পর ভাইপো বাহিনী এখানে ভোট করতে দেয়নি। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেউ এখান মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছেন?” তিনি বলেন, “এবার খেলাটা দেখাব! গ্রামে প্রার্থী ঠিক করতে পারবেন তো? নমিনেশেন পাইয়ে দেওয়ার দায়িত্ব আমার। আজ এখানে সবেমাত্র লাঙ্গল দিয়ে গেলাম। এরপর ধান ফেলা হবে, রোয়া হবে।” শুভেন্দুর ভবিষ্যৎবাণী, “ডিসেম্বর মাসে আসব এবং বিজয় সমাবেশ করতে আসব। সঙ্গে এক হাতি-গাড়ি ভর্তি লাড্ডু নিয়ে আসব। কারণটা এখন বলা যাবে না।”
শুভেন্দু অধিকারীর হুঁশিয়ারি, “শুনে রাখুন নির্বাচন পরবর্তী সময়ে যারা ফলতা, বারুইপুরে, কুলপিতে অত্যাচার করেছে, যারা বিজেপি কর্মীদের খুন করেছেন তাদের ছাড়া হবে না। এসব সুদে আসলে আদায় করব। এর সঙ্গে দণ্ডসুদও নেব। সিপিএমের সূর্য যখন মধ্যগগনে তখন ওপারের মুখ্যমন্ত্রী লক্ষ্মণ শেঠকে হারানো পার্টি আমি। তৃণমূলের সূর্য যখন মধ্য গগনে তখন এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আমার কাছে হেরেছেন।” এরপরেই নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর আক্রমণ, “এখানকার সাংসদ সর্বভুক, তিনি কয়লা খান, বালি খান, স্কুলের ইউনিফর্ম খান। ৫০ হাজার চাকরি বেচেছেন।”
শুভেন্দুর কটাক্ষ, “আগে নেতারা বলতেন ‘কলকাতা চলো’। এখন পিসি-ভাইপো কথায় কথায় বলেন ‘কাঁথি চলো’। আতঙ্কের নাম শুভেন্দু অধিকারী।’’ সেই সঙ্গে হুঁশিয়ারি, “কনটেম্পট পিটিশন ফাইল হবে। যত গাড়ির কাচ ভেঙেছেন, সরকারের কাছ থেকে টাকা আদায় করব। যত জন আহত হয়েছেন, ক্ষতিপূরণ আদায় করব। কী করে করতে হয় আমি জানি।” বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশ্যের নেতার বক্তব্য, “আমাদের যে সব কর্মীদের আহত করেছে, তাঁদের শুশ্রূষার দায়িত্ব আমার। আপনারা আইন হাতে তুলে নেবেন না। এরপর সভা করতে এলে আর ছোট গাড়িতে আসতে বলব না। পাঁচটি ট্রেন ভাড়া করতে বলব। আর হটুগঞ্জের মতো করলে, যদি ট্রেনের পাতের উপরে বসে আরপিএফের মার, অমবস্যা-পূর্ণিমায় কটকট করবে।’’