দিন কয়েক আগেই সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয় একটি ভিডিও। তাতে তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মাজিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে প্রশস্তি করতে দেখা যায়। এমনকি তিনি বিভিন্ন যুক্তি খাড়া করে মন্তব্য করেন, মমতাই মা সারদার পুনর্জন্ম। যদিও GNE Bangla-র তরফে ঐ ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করা হয়নি। কিন্তু ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই বিতর্ক তৈরি হয়। এবার বিবৃতি জারি করে ভিডিও বক্তব্য খন্ডন করলো রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে দলের তরফেও ভৎসনা করা হল নির্মলকে।
ভিডিও-র ব্যক্তিকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “মা সারদা বলেছিলেন, মৃত্যুর এত দিন পরে কালীঘাটের কালীক্ষেত্রে মানুষ রূপে জন্ম নেব। ত্যাগ, তিতিক্ষা, সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে যাব। সংখ্যাতত্ত্বের হিসেবে মা সারদার মৃত্যুর পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মের সময়টা সেই অঙ্ক মিলিয়ে দিচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “তিনিই মা সারদা, তিনিই ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল, সিস্টার নিবেদিতা, খড়ের দুর্গা। অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে তাঁর জন্ম। তাই মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু সবেতেই তিনি পাশে রয়েছেন।”
এই ভিডিও সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হতেই তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবার বিবৃতি জারি করে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের তরফে ভিডিও বার্তা দেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ। তিনি বলেছেন, “আমরা যথেষ্ট উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, সম্প্রতি কোনও এক রাজনৈতিক নেতা প্রকাশ্য বক্তৃতায় বলেছেন যে, শ্রীশ্রী দেবী সারদা মা না কি দেহত্যাগের আগে রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজদের বলে গিয়েছেন, তিনি এর পরে মানবীরূপে দক্ষিণ কলকাতায় আবির্ভূত হবেন এবং তখন তিনি ত্যাগ, তিতিক্ষা, সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে যাবেন। শ্রীশ্রী মা সারদাদেবী সম্পর্কে রামকৃষ্ণ মঠ এবং রামকৃষ্ণ মিশন এবং অন্যান্য প্রকাশন সংস্থা থেকে যে কয়েকটি প্রামানিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তার কোনওটিতেই এই তথ্য নেই।” তিনি আরও বলেছেন, “আমাদের পরম আরাধ্যা সারদাদেবীর মর্যাদাহানি করেছেন। ক্ষোভ ও মর্মবেদনা প্রকাশ করার কোনও উপযুক্ত ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। আমাদের সকলের মায়ের এই অসম্মান দুঃসহ বলে মনে হচ্ছে।”
এখানেই সেসব নয়। তৃণমূলের মুখপাত্র তথা রাজ্যের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ নির্মলের বক্তব্যকে ‘কুৎসিত চাটুকারিতা’ বলে উল্লেখ করে জানিয়েছেন, “মা সারদা সকলের প্রণম্য। তাঁর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তুলনার তো কোনও দরকারই ছিল না। এটা অপ্রয়োজনীয় কুৎসিত চাটুকারিতা।”