শিক্ষামন্ত্রী বেপাত্তা, আন্দোলনের ৫০০ দিনে চাকরি প্রার্থীদের সামনে অভিষেকের আবির্ভাব

শিক্ষামন্ত্রী বেপাত্তা, আন্দোলনের ৫০০ দিনে চাকরি প্রার্থীদের সামনে অভিষেকের আবির্ভাব

বিরোধীরা সুর তুলেছেন, ‘ঠেলার নাম বাবাজি!’ তাঁদের আরও কটাক্ষ, পার্থ-অর্পিতা যৌথ কীর্তিতে বাধ্য হয়েই সরকার পক্ষের বোধহয় এবং যোগ্যপ্রার্থীদের চাকরির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবু-শিক্ষকদের সামনে আবির্ভুত হতে চলেছেন সরকারের নয়, শাসকদলের প্রতিনিধি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

বৃহস্পতিবার হবু-শিক্ষক চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের অন্যতম নেতা শহীদুল্লাহ-র সঙ্গে দূরাভাষে বাক্যালাপ করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। আশ্বাস দেন তাঁদের দাবি ও বক্তব্য শোনার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে অভিষেক আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে জানান ও সমাধানের চেষ্টার আশ্বাস দেন। সূত্রের খবর, শুক্রবারই নিজের ক্যামাক স্ট্রিটের দফতরে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। কিন্তু প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর গ্রেপ্তারি, কোটি কোটি টাকা উদ্ধার, পার্থর সাসপেনশন আবহে অভিষেকের পদক্ষেপকে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা’ হিসেবে দেখছেন বিরোধীরা। একই সঙ্গে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

আরও পড়ুন:  শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাবার

রাজ্যে বিগত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ ও এসএসসি-র বিভিন্ন নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বারংবার। চাকরিপ্রার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন অনেক দিন। গিয়েছেন আদালতেও। আদালতের নির্দেশে তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। আগের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন ব্রাত্য বসু। অবস্থান বিক্ষোভ ও আন্দোলন অতিক্রম করেছে ৫০০ দিন। বারংবার আটক হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা, পুলিশ শক্তি প্রয়োগ করে তুলে দিয়েছে, পুলিশের ও সরকারের বিরুদ্ধে দমন নীতির অভিযোগ উঠেছে। তাও অনড় আছেন শিক্ষিত-বেকার-চাকরিপ্রার্থী আন্দোলনকারীরা। বারংবার ডেপুটেশন দিয়েছেন। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাতের দাবি জানিয়েছেন, তাঁদের অভিযোগ গুরুত্ব দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু কাকস্য পরিবেদনা। এবার হঠাৎ-ই অবস্থার পরিবর্তন। গত কয়েক দিনে রাজ্য-তথা জাতীয় রাজনীতিতে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। ম্যারাথন জেরার পর ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর ঘনিষ্ঠ হিসেবে উল্লিখিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের একাধিক ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে মোট প্রায় ৫০ কোটি টাকার নগদ, বৈদেশিক মুদ্রা, কিলো কিলো সোনা উদ্ধার হয়েছে। এতদিন কেন্দ্রীয় সরকার ও তদন্তকারী সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ আনা তৃণমূল তড়িঘড়ি অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করেছে মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। তার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে সরিয়ে দিয়েছেন মন্ত্রীর পদ থেকে। এবার সরকার না হলেও সরকার পক্ষের প্রতিনিধিরা এতদিন ব্রাত্য থাকা আন্দোলনকারীদের উপর সদয় হয়েছেন। অভিষেক দেখা করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু বিরোধীরা কটাক্ষ হানছেন। তাঁদের বক্তব্য, শিক্ষামন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী থাকতে হঠাৎ শাসক দলের দলীয় নেতার বোধদয় কেন! দুর্নীতি স্পষ্ট ভাবে প্রকাশ্যে আসায় এটি আসলে রাজ্যের তাৎক্ষণিক সমস্যা নিয়ন্ত্রণের পন্থা বলেই অভিযোগ তাঁদের।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

হোম
জয়েন গ্রুপ
স্থানীয় খবর
জয়েন গ্রুপ
গুগল নিউজ